‘পাকিস্তান ক্রিকেটের বিরাট ক্ষতি’

স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে দীর্ঘদিনের জন্য ক্রিকেট অঙ্গন থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন পাকিস্তানি তিন ক্রিকেটার সালমান বাট, মোহাম্মদ আমির ও মোহাম্মদ আসিফ। গতকাল শনিবার নয় ঘণ্টার শুনানি শেষে আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট বাটকে ১০, আসিফকে সাত ও আমিরকে পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আইসিসির এই সিদ্ধান্তের পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা। কেউ কেউ এটাকে ভবিষ্যতের ক্রিকেটারদের জন্য একটা ভালো দৃষ্টান্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন, আবার কেউ কেউ আইসিসির এই সিদ্ধান্তের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তবে তরুণ ক্রিকেট-ত্রয়ীর ক্রিকেট অঙ্গন থেকে এভাবে ছিটকে পড়ার ঘটনাটা পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্যই একটা বিশাল ক্ষতি, সেটা একবাক্যে স্বীকার করেছেন সবাই।
সাবেক অধিনায়ক ওয়াসিম আকরামের মতে, এই শাস্তি একটা নজির সৃষ্টি করবে, যেন ভবিষ্যতে আর কেউ এ পথে পা না বাড়ায়। তিনি বলেছেন, ‘এটা শুধু পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের জন্যই না, গোটা ক্রিকেট দুনিয়ার জন্যই একটা দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে। আমি আশা করছি, আইসিসির এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে পুরো ক্রিকেট দুনিয়াকেই দুর্নীতির বাইরে রাখতে সাহায্য করবে।’ নিজে ছিলেন ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার। তাই আইসিসির এই সিদ্ধান্তে পাকিস্তান ক্রিকেট থেকে দুজন পেসার ঝরে যাওয়ায় কষ্টটা তীর-ধনুকের মতোই বিঁধছে ওয়াসিম আকরামের বুকে।
পাকিস্তানের সাবেক বাঁ-হাতি স্পিনার ইকবাল কাশিম আইসিসির এই সিদ্ধান্তকে ‘হতাশাজনক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বলেছেন, ‘এই তিনজনই ছিল পাকিস্তান ক্রিকেটের ভবিষ্যত্ তারকা। এটা খুবই হতাশাজনক। তিনজনেরই সামনে খুব উজ্জ্বল ভবিষ্যত্ ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তারা প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়েছে। পরে আর সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। আশা করছি এই শাস্তিটা ভবিষ্যত্ ক্রিকেটারদের জন্য দৃষ্টান্ত হিসেবেই কাজ করবে। তরুণ ক্রিকেটাররা আরও দায়িত্বশীল হবে।’ তবে পুরো ব্যাপারে পিসিবির ভূমিকার ভালোই সমালোচনা করেছেন কাশিম। তিনি বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই ক্রিকেটে এসব বাজে ব্যাপারগুলো ঘটলেও পিসিবি জেনে-বুঝেই চুপ করে থেকেছে। এতে পাকিস্তানের ক্রিকেটেরই ক্ষতি হয়েছে। আশা করছি পিসিবি এমন ব্যাপারগুলোতে যত্নশীল ও দায়িত্ববান হবে।’
পাকিস্তানের সাবেক বোলিং তারকা সরফরাজ নেওয়াজ আমির ও আসিফকে বর্তমান সময়ের সেরা বোলিং জুটি হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘আমির ও আসিফের বহিষ্কারে পাকিস্তানের প্রচণ্ড ক্ষতি হয়ে গেল। আগামী বিশ্বকাপেও তাঁদের অনুপস্থিতি ভালোভাবেই টের পাবে পাকিস্তান।’
সাবেক তারকারা যা-ই বলুন না কেন, সাধারণ পাকিস্তানিরা আইসিসির এই সিদ্ধান্ত কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। অনেকে একে পাকিস্তানের ক্রিকেটকে কোণঠাসা করার অভিপ্রায়ে আইসিসির ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কেউ কেউ এক কাঠি এগিয়ে বলেছেন, ‘পাকিস্তান যেন বিশ্বকাপ জিততে না পারে, সেজন্য আইসিসি দলের তিন প্রধান খেলোয়াড়কে বহিষ্কার করেছে।

No comments

Powered by Blogger.