শুরুতেই সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচ

লিগের প্রথম দিনেই বড় ম্যাচ মানে শুরুতে শিরোপাপ্রত্যাশী এক দল একটু পিছিয়ে পড়ে। অন্য দল বড় বাধা পেরোয়। কিন্তু এটি জিতলেই লিগ জিতে গেলাম, হারলে সব শেষ—ব্যাপারটা এমন নয়।
আজ চতুর্থ পেশাদার লিগ শুরুর প্রথম দিনই এই কথাটা মনে করিয়ে দিচ্ছে। গত তিনটি পেশাদার লিগের চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর সামনে নবাগত পরাশক্তি শেখ জামাল ধানমন্ডি। আবাহনী প্রতিষ্ঠিত শক্তি, শেখ জামালে জাতীয় দলের প্রায় সব খেলোয়াড়। এবার মুক্তিযোদ্ধা, শেখ রাসেল এমনকি ব্রাদার্সও শিরোপা দৌড়ে থাকতে পারে। দুর্বল হলেও নামের ওজনে মোহামেডানকেও উপেক্ষা করা যাবে না। তবে আবাহনী-শেখ জামালের শিরোপা সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি।
মাঠে এই দুই দলের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে তা অনূদিত হলে চতুর্থ বাংলাদেশ লিগ জমজমাটই হবে। যেমনটা গত ফেডারেশনের কাপের ফাইনালে দেখা গিয়েছিল। আবাহনী-শেখ জামাল রুদ্ধশ্বাস লড়াই সেদিন কমলাপুরের মাঠভর্তি দর্শককে বিমোহিত করেছিল। প্রথম লড়াইয়ে জয় আবাহনীর। গোলবহুল ম্যাচটি আকাশি-নীলরা জিতেছিল ৫-৩-এ।
আজ বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে কমলাপুরের মাঠেই শুরু হচ্ছে দুই দলের দ্বিতীয় সাক্ষাৎ। পেশাদার লিগে প্রথম। শেখ জামাল নাম নিয়ে নবরূপে যাত্রা করা ধানমন্ডি ক্লাবেরও পেশাদার লিগে অভিষেক ম্যাচ এটি।
আবাহনী এ পর্যন্ত তিনটি পেশাদার লিগে মোট ৬৪টি ম্যাচ খেলেছে। জয় ৫২টি, ড্র ৮, হার ৪। আবাহনীর এই বিশাল অভিজ্ঞতার সামনে দল হিসেবে শেখ জামাল দুধের শিশু, কিন্তু তাদের খেলোয়াড়েরা নন। পেশাদার লিগের এর আগে অন্য দলে খেলে তাঁরা অভিজ্ঞতায় পুষ্ট।
কিন্তু একটা জায়গায় স্পষ্টই দুই দলের মাঝখানে ব্যবধান দেখা যাচ্ছে। আত্মবিশ্বাস, উদ্দীপনা, প্রস্তুতি—সবকিছুতেই জামালের চেয়ে আবাহনী এগিয়ে। এ মৌসুমে আসামের বরদুলই ট্রফির পর ফেডারেশন কাপ জিতেছে আবাহনী। ব্যাংককে ১১ দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্প করে কেবলই দলটি দেশে ফিরেছে। লিগ নিয়ে গোটা দলই আত্মবিশ্বাসী।
আবাহনীর ইরানি কোচ আলী আকবর পোরমুসলিমি বলছেন, ‘এটি আর দশটা ম্যাচের মতোই। এই ম্যাচের পর আরও ২১টি ম্যাচ থাকবে, অনেক কিছুই ঘটতে পারে। ম্যাচটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি বটে কিন্তু এটিই সব নয়।’
কাল বিকেলে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে দলকে অনুশীলন করিয়ে ফেরার পথে শেখ জামালের কোচ জোরান কার্লেভিচের মুখেও একই কথা শোনা গেল, ‘এই ম্যাচই সব নয়। অনেকে এটিকে ফাইনালও বলে ফেলছেন, কিন্তু আমি তা মনে করি না। সামনে অনেক পথ, অনেক কিছুই তখন হতে পারে।’
ঠিকই বলেছেন। তবে আজকের ম্যাচ শেখ জামালের কাছে প্রতিশোধের ম্যাচও কি নয়? সার্বিয়ান কোচ বললেন, ‘তা তো অবশ্যই।’ স্ট্রাইকার এমিলি, ডিফেন্ডার ওয়ালি ফয়সাল জ্বর থেকে সেরে উঠলেও এখনো ফিট মনে করেন না কার্লেভিচ। চোট আছে শাহেদ, কমল, মিন্টু শেখের। এই পাঁচজনকে ছাড়াই আজ দল সাজানোর ইঙ্গিত কার্লেভিচের। এদিক থেকে আবাহনীর তেমন দুশ্চিন্তা নেই।
গত তিনটি পেশাদার লিগ আবাহনী-মোহামেডানের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাইরে আর তেমন কিছুই দেখেনি। এবার দেখা যাবে—ফুটবল অঙ্গনে এমন আশাবাদ। আশা পূরণ করার দায়িত্বটা আবাহনী-শেখ জামালের ওপর একটু বেশিই। দুই দলের এই লড়াইটা তাই পেয়ে যাচ্ছে ভিন্নমাত্রা।

No comments

Powered by Blogger.