ছয় ব্যাংককে তহবিল ব্যবস্থাপনা ১৫ দিনে ঠিক করতে হবে

আরও ছয়টি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের ডেকে এনে তাঁদের তহবিল ব্যবস্থাপনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে তহবিল ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা কাটাতে।
সাম্প্রতিক মুদ্রা বাজারে অস্থিরতা ও উচ্চসুদে (সর্বোচ্চ ১৯০ শতাংশ) বাজারে অর্থ লেনদেন (কলমানি) নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর এই নির্দেশ দিয়েছে। এই ব্যাংকগুলো হলো: ইস্টার্ন ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউসিবিএল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নজরুল হুদা গতকাল বৃহস্পতিবার ছয়টি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীসহ তহবিল ব্যবস্থাপকদের তলব করে এনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোভাব জানিয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এস কে সুর চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ইতিমধ্যে মুদ্রাবাজারে কলমানির সুদের হার অনেকটা সহনীয় হওয়াসহ অস্থিরতা কেটে গেছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আগামী দু-এক লেনদেন দিবসে বাজার আরও স্থিতিশীল হয়ে আসবে বলে মনে করছি আমরা।’
সূত্র জানায়, ব্যাংকগুলোর সঙ্গে পৃথক বৈঠকে নজরুল হুদা বলেন, ইস্টার্ন ও ন্যাশনাল ব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে অর্থ ধার করে আবার পরে উচ্চসুদে ধার দিয়েছে। আবার একটা ব্যাংকের অর্থ প্রয়োজন না থাকলেও ব্যাংকটি ধার করে আবার খাটিয়েছে।
অন্যদিকে বাকি ব্যাংকগুলোর আমানত-ঋণ অনুপাত যা থাকা উচিত, তার চেয়ে বেশি। ব্যাংকগুলো অস্বাভাবিক এবং ঘোষিত সুদের চেয়ে বেশি সুদ দিয়ে আমানত সংগ্রহ করেছে।
ডেপুটি গভর্নর স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব অব্যবস্থা ঠিক করা না হলে ব্যাংকগুলোর নতুন শাখা ও বৈদেশিক বিনিময় শাখার নিবন্ধন দেওয়া হবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দিক থেকে ঋণ নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বিদেশে এক্সচেঞ্জ হাউস খুলতে দেওয়া হবে না এবং আরও বেশি কঠোর হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে আগাম সতর্কব্যবস্থার (আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম) আওতায় নিয়ে আসবে।
এদিকে গতকাল মুদ্রাবাজারে কলমানির সুদের হার নেমে ২০-২৫ শতাংশের মধ্যে চলে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, দু-এক দিনের মধ্যে এই হার ২০-এর নিচে চলে আসবে।
এর আগে গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক আরও দুটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের তলব করেছিল। ব্যাংক দুটি হলো সিটি ব্যাংক ও এবি ব্যাংক। তাঁদেরও একই ধরনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.