বিহারে ১২ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করেছে মাওবাদীরা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরে মাত্র দুই দিন আগে ২৪ পুলিশ সদস্যের হত্যাকাণ্ডের ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই বিহারের একটি গ্রামে গত বুধবার শেষরাতে ১২ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করেছে মাওবাদীরা। পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারের জামুই জেলার কাসারি গ্রামে ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শতাধিক মাওবাদী ওই হামলা চালায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যৌথ বাহিনী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলপাহাড়ির তুলাখেড়া জঙ্গলে মাওবাদীদের ধরতে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে।
বুধবার রাতের হামলার খবরে বলা হয়, ওই রাতে দেড় শতাধিক মাওবাদী বিদ্রোহী কাসারি গ্রামে হামলা চালিয়ে ২৫টির বেশি কাঁচা বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় বহু মানুষ আহত হয়। পুলিশের মহাপরিচালক ইউ এস দত্ত সাংবাদিকদের বলেন, শতাধিক মাওবাদী পুরো গ্রামটি ঘিরে ফেলে বাড়িঘরে নির্বিচারে আগুন জ্বালিয়ে দেয় এবং বোমার বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে। এ ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছে। ওই সময় মাওবাদীরা ছয়জনকে অপহরণ করে।
স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মাওবাদীদের সন্দেহ, চলতি মাসের গোড়ার দিকে তাদের ১১ সদস্যকে গ্রেপ্তারে সরকারি বাহিনীকে সহায়তা করেছিল এই গ্রামের লোকজন।
পুলিশ জানায়, তারা ধারণা করছে, অপহরণকারীদের পার্শ্ববর্তী ঝাড়খন্ড রাজ্যের গভীর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই রাজ্যেই মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি।
গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গের বেলপাহাড়ির শিলদার যৌথ বাহিনীর ক্যাম্পে মাওবাদীদের অতর্কিত হামলায় ২৪ জন আধাসামরিক জওয়ানের মৃত্যুর পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যৌথ বাহিনী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলপাহাড়ির তুলাখেড়া জঙ্গলে চিরুনি অভিযান শুরু করে। তারা ইতিমধ্যে ওই জঙ্গল ঘিরে ফেলেছে। জঙ্গলে পুঁতে রাখা চারটি মাইনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। সেখানে মর্টারের শব্দও শোনা গেছে।
সোমবারের মাওবাদী হামলায় নিহত ২৪ জওয়ানের পরিবারসহ স্থানীয় লোকজন মঙ্গলবার থেকে পশ্চিমবঙ্গের সালুয়ায় সড়ক অবরোধ করে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছে। তারা ঘটনাস্থলে মুখ্যমন্ত্রী এসে দুঃখ প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে। আজ শুক্রবার তারা সালুয়ায় আমরণ অনশন শুরু করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য গতকাল মাওবাদী হামলার নিন্দা এবং নিহত জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে।
রাজ্য সরকার মাওবাদী হামলা তদন্তের ভার ইতিমধ্যে সিআইডির হাতে তুলে দিয়েছে। সিআইডির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।
মাওবাদী নেতা কিষানজি গতকালও বলেছেন, সরকার অপারেশন গ্রিনহান্ট বন্ধ না করলে তাঁরাও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে অপারেশন পিসহান্ট চালিয়ে যাবেন।

No comments

Powered by Blogger.