গনির ধরা পড়া ‘বড় সাফল্য’: যুক্তরাষ্ট্র

তালেবানের শীর্ষস্থানীয় নেতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদারের ধরা পড়ার ঘটনাকে একটি ‘বড় সাফল্য’ হিসেবে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বুধবার পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী গনির ধরা পড়ার খবর নিশ্চিত করে। একই দিন মার্কিন কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে প্রশংসা করে বিবৃতি দেন।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র রবার্ট গিবস বুধবার বলেন, ‘ওই এলাকায় (তালেবানের বিরুদ্ধে) আমাদের যৌথ উদ্যোগের একটি বড় সাফল্য এটি।’ পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী ও মার্কিন গোয়েন্দারা চলতি মাসে করাচিতে যৌথ অভিযান চালিয়ে গনিকে ধরে। পাকিস্তানে ধরা পড়া তালেবান জঙ্গিদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বড় নেতা। বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, গনির কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।
মার্কিন বিশেষ দূত রিচার্ড হলব্রুকও গনির আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনিও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি। আফগানিস্তানের কাবুলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তালেবানবিরোধী লড়াইয়ে এটা সুস্পষ্ট একটা অগ্রগতি।’
এদিকে মোল্লা গনি ধরা পড়লেও তালেবানের অন্যান্য কমান্ডারকে ধরার ক্ষেত্রে পাকিস্তান সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে কতখানি সহায়তা করবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন মার্কিন কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলেছেন, গনিকে ধরার ক্ষেত্রে পাকিস্তানি নিরাপত্তা-সদস্যরা সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু তালেবান বা আল-কায়েদার অন্য নেতাদের ধরার ক্ষেত্রে পাকিস্তানি নিরাপত্তা-সদস্যরা সহযোগিতা করবেন কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পাকিস্তান এ ব্যাপারে গড়িমসি করলে আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক বিশ্লেষক ব্রুক রিডেল বলেন, ‘পাকিস্তানিরা রাতারাতি বদলে যাবে, এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই।’ পাকিস্তানি রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসান আশকারি বলেন, ‘এই গ্রেপ্তার খুবই তাত্পর্যপূর্ণ। তালেবানের জন্য এটি বড় ধাক্কা। তাদের মনোবল ভেঙে যাওয়ার একটি ভালো প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারে এটি।’
একজন মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, মোল্লা আবদুল গনি আফগানিস্তানে তালেবান তত্পরতার অন্যতম হোতা ছিলেন। তাঁকে আটক রাখা হলে অন্তত কিছুদিনের জন্য তালেবানের তত্পরতায় ঘাটতি তৈরি হবে এবং তালেবানের শীর্ষ নেতা মোল্লা ওমরের জন্য ব্যক্তিগত সমস্যা তৈরি হবে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আবদুল গনি দীর্ঘদিন ধরেই মোল্লা ওমরের বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন।
মোল্লা গনির ধরা পড়ার বিষয়টি এমন এক সময়ে প্রকাশ করা হয়েছে, যখন আফগানিস্তানে তালেবানের শক্ত ঘাঁটি হেলমান্দে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী তালেবানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে।

No comments

Powered by Blogger.