প্রথম প্রান্তিকে বাজেট ঘাটতি অর্থায়ন ৮২% কমে গেছে

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বাজেট ঘাটতি অর্থায়ন আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৮২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ২০০৯-১০ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়কালে মাত্র এক হাজার ৩২০ কোটি ৩২ লাখ টাকার ঘাটতি অর্থায়ন করা হয়েছে।
আগের অর্থবছরের একই সময়ে এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল সাত হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা।
পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, উন্নয়ন-ব্যয়ে গতি না আসা এবং অধিক হারে ব্যাংকঋণ ফেরত দেওয়ার কারণে ঘাটতি অর্থায়ন কমে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুসারে, আলোচ্য সময়কালে সরকার যে পরিমাণ ব্যাংকঋণ নিয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি ঋণ ফেরত দিয়েছে। এর ফলে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়কালে প্রকৃত ঋণ গ্রহণ নেতিবাচক হয়ে গেছে।
এ সময়কালে সরকার নিট হিসাবে দুই হাজার ৫৪৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার ঋণ ফেরত দিয়েছে।
২০০৮-০৯ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সরকার তিন হাজার ৬৬৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যাংকঋণ নিয়েছিল।
তবে ব্যাংক-বহির্ভূত উত্স থেকে সরকার চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দুই হাজার ৯৭৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে।
গত অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়কালে এ উত্স থেকে সরকার ৯৪৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ঋণ নিয়েছিল।
ব্যাংক-বহির্ভূত উেসর প্রায় পুরোটাই অবশ্য আসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে।
জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট ছয় হাজার ৭৫ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৬৬ শতাংশ বেশি।
গত অর্থবছরের একই সময়ে তিন হাজার ৬৪৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল।
অবশ্য চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আগে বিক্রীত সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করায় সরকারকে তিন হাজার ২৬৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা ফেরত দিতে হয়েছে। এর ফলে সঞ্চয়পত্রের প্রকৃত বিক্রি দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই হাজার ৮১০ কোটি টাকা।
সঞ্চয়পত্রের এই প্রকৃত বিক্রি গত অর্থবছরের একই সময়কালে বিক্রীত প্রকৃত সঞ্চয়পত্রের প্রায় চার গুণ। ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়কালে সঞ্চয়পত্রের প্রকৃত বিক্রির পরিমাণ ছিল ৭৫৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
ঘাটতি অর্থায়নের জন্য সরকার চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বিদেশি উত্স থেকে ৮৯০ কোটি ৪১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ঋণ নিয়েছিল দুই হাজার ৯২৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, আলোচ্য সময়কালে দেশে মোট ২৫ কোটি ৭০ লাখ ডলারের সহায়তা এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ৫৬ কোটি ডলারের।
আবার চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আগে নেওয়া বিদেশি ঋণের মূল বাবদ ১২ কোটি ৮০ লাখ ডলার ফেরত দেওয়ায় প্রকৃত বিদেশি সাহায্য পাওয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সরকার বিদেশি ঋণের মূল বাবদ প্রায় ১৩ কোটি ২৮ লাখ ডলার ফেরত দেওয়ায় ওই সময়ে প্রকৃত বিদেশি ঋণ প্রাপ্তির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪২ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।

No comments

Powered by Blogger.