বিশ্ব ‘দূষণ’ কাপ!

কোপেনহেগেনে চলছে জলবায়ু সম্মেলন। ১৯০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধি একত্র হয়েছেন ধরিত্রীকে বাঁচাতে। বৈষ্ণিক উষ্ণতা নিয়ে আলোচনা করতে, কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর গ্যাসের নিঃসরণ কমানোর পথ খুঁজতে। ঠিক সেই সময় খবর এল, গত জার্মানি বিশ্বকাপের তুলনায় ২০১০ বিশ্বকাপে দূষণ হবে নয় গুণ বেশি! ‘জার্মানির চেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ নয় গুণ বেশি ছাপ রেখে যাবে পৃথিবীর বুকে’—পরশু দুঃসংবাদটি শুনিয়েছেন আয়োজক দেশটির জলবায়ুবিষয়ক সংস্থার প্রধান ডোরা নিও।
এই দূষণের প্রধান কারণ হবে বিমান যাতায়াত। বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় আসা বিমানগুলোর কারণেই হবে ৮৫ শতাংশ দূষণ। শুধু আন্তর্জাতিকভাবেই নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার এক ভেন্যু থেকে অন্য ভেন্যুতে যাওয়ার জন্য আঁকাবাঁকা বিমানপথও জোগান দেবে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের। আগামী বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি দর্শক আসবে ইউরোপ আর আমেরিকা মহাদেশ থেকে, আফ্রিকা থেকে যে দুটির দূরত্ব অনেক।
জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির মুখপাত্র থিওডর ওবেন জানিয়েছেন, বেইজিং অলিম্পিকের তুলনায় আগামী বিশ্বকাপে দ্বিগুণেরও বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন হবে বলে আশঙ্কা তাঁদের, ‘আমাদের আনুমানিক হিসাব মতে, এই বিশ্বকাপে সাড়ে ২৭ লাখ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মতো গ্যাস নির্গমন হবে। বেইজিং অলিম্পিকের সঙ্গে এটি তুলনা করতে পারেন আপনি, যেখানে ১১ লাখ ৮০ হাজার টন নির্গমন হয়েছিল।’
সারা বিশ্ব থেকে এবার ৪ লাখ ফুটবল-সমর্থক দক্ষিণ আফ্রিকায় আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় আসতে এদের ৭১ লাখ কিলোমিটার বিমান-ভ্রমণ করতে হবে। যার ফলে নির্গত হবে ১৬ লাখ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড। জাতিসংঘ তাই বিমানের টিকিট কেনার সময় একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সমর্থকদের। একই আহ্বান পৌঁছে গেছে ৩২ দলের কাছেও।
এরই মধ্যে ব্রাজিল, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্রসহ ২০ দল সেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। বাকি দলগুলোও এখনো আপত্তি করেনি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। দল ও সমর্থক মিলে মোট ৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার দরকার ক্ষতিপূরণ হিসেবে।

No comments

Powered by Blogger.