মুসলিমদের ওপর হামলার পর শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি

শ্রীলঙ্কায় সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর হামলা চালিয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রদায়। মসজিদ ও মুসলমানদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ওপর একাধিক হামলার পর দেশটিতে ১০ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার। এছাড়া মধ্যাঞ্চলীয় কান্দি শহরের কিছু কিছু এলাকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ  সিনহালারা মুসলিমদের দোকানপাট ও বাড়িঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করার পর সোমবার সেখানে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও বিবিসি বাংলা।
খবরে বলা হয়, এক বছর ধরে কান্দি শহরে সম্প্রদায় দুটির মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছিল। সেখানে কট্টরপন্থি কিছু বৌদ্ধ গ্রুপ মুসলিমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে। তারা বলে, মুসলিমরা জোর করে লোকজনকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করাচ্ছে। এ নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনায় বৌদ্ধদের প্রত্নতাত্ত্বিক কিছু স্থাপনায় ভাঙচুর করা হয়। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কায় আশ্রয়প্রার্থী মিয়ানমারের মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করতে থাকে কিছু বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী। সোমবার সেখানে পরিস্থিতি গুরুতর রূপ নিলে কারফিউ জারি করা হয়। কিন্তু পরে সেটি কিছু সময়ের জন্য তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু ২৪ বছর বয়সী এক মুসলিম তরুণের মৃতদেহ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে আবার জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চারটি মসজিদ, ৩৭টি বাড়িঘর, ৪৬টি দোকান এবং ৩৫টি গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ভেঙে ফেলা হয়েছে, মুসলিমরা এখন সেখানে আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে।’ কর্মকর্তারা বলেন, মঙ্গলবার আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি বাড়ির পাশে মুসলিম এক তরুণের মরদেহ উদ্ধারের পর সেখানে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। মুসলিমরাও প্রতিশোধ নিতে পাল্টা হামলা চালাতে পারে এই আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
এ বিষয়ে সরকারের মুখপাত্র বলেন দয়াসিরি জয়সেকারা বলেছেন, দেশের অন্য এলাকাগুলোয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়া রোধে মন্ত্রিপরিষদের জরুরি বৈঠকে ১০ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ফেসবুক ব্যবহার করে যারা সহিংসতা উসকে দেবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.