খাওয়ার স্যালাইনের অন্যতম আবিষ্কারক ডা. রফিকুল ইসলাম আর নেই

খাওয়ার স্যালাইন আবিষ্কারক ডা. রফিকুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন। গত সোমবার সকালে রাজধানীর এ্যাপোলো হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। এর আগে গত মাসে হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল তার। এছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। আইসিডিডিআর,বি’র সাবেক বিজ্ঞানী ডা. এমএ ওয়াহেদ জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পশ্চিমবঙ্গে শরণার্থী শিবিরগুলোতে একবার কলেরা ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন এর একমাত্র চিকিৎসা ছিল শিরায় দেয়া স্যালাইন (ইন্ট্রাভেনাস)। কিন্তু এ ধরনের স্যালাইনের সরবরাহ কম থাকায় খাবার স্যালাইন দিয়ে অনেকের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছিল।
১৯৩৬ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন রফিকুল ইসলাম। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। এরপর তিনি আইসিডিডিআর,বি’তে যোগ দেন। এখানে তিনি ওষুধ নিয়ে নানা পরীক্ষা- নিরীক্ষা চালালেও তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ওআরএস। ২০০০ সাল পর্যন্ত আইসিডিডিআর,বি’তে কর্মরত ছিলেন রফিকুল। তিনি বৃটেনে ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও হাইজিন বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন।
তার অনবদ্য আবিষ্কার ওআরএসকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ডায়রিয়া চিকিৎসায় স্যালাইনের ব্যবহার নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। এ কারণে এটি “ঢাকা স্যালাইন” নামেও পরিচিতি পেয়েছিল। জনস্বাস্থ্যে খাবার স্যালাইনের গুরুত্ব বিবেচনায় বৃটিশ মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যান্সেট একে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার আখ্যা দিয়েছিল। ডায়রিয়ার হাত থেকে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ শিশুর জীবন বাঁচানোর কৃতিত্ব দেয়া হয় খাবার স্যালাইনকে (ওআরএস)। সব ওষুধের দোকানেই স্বল্পমূল্যে খাবার স্যালাইন পাওয়া যায়।

No comments

Powered by Blogger.