কে হচ্ছেন এফবিআই প্রধান

মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এফবিআই) প্রধান জেমস কমিকে বরখাস্তের পর তার স্থলাভিষিক্তের জন্য শনিবার প্রথমবারের মতো সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরখাস্তকৃত এফবিআই প্রধান কমির স্থলাভিষিক্তের জন্য চারজন সাক্ষাৎকার দেবেন। প্রার্থীরা হলেন- এফবিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান অ্যান্ড্র– ম্যাক্যাবে, রিপাবলিকান সিনেটর জন কর্নিন, নিউইয়র্ক আপিল কোর্টের বিচারক মাইকেল গার্সিয়া এবং সিনিয়র নারী আইনজীবী এলিস ফিশার। তারা যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন্স এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রড রোজেনস্টেইনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। কিন্তু মার্কিন গণমাধ্যমগুলো বলছে, তালিকায় ১১ জনের নাম বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এফবিআই প্রধান কমিকে বরখাস্তের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগের তদন্ত করছিলেন কমি। তদন্ত চলাকালীন হঠাৎ করেই মঙ্গলবার কমিকে এফবিআই প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসার বলেন, যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রেসিডেন্ট ওই পদে যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ দেবেন, যার কাছ থেকে প্রত্যাশা পূরণ হবে। ফক্স নিউজ সরকারি একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বলছে, যতো দ্রুত সম্ভব কমির স্থলাভিষিক্ত করতে কাউকে খোঁজা হচ্ছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে তালিকায় থাকা রিপাবলিকান সিনেটর জন কর্নিন ছিলেন টেক্সাস রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল। সাবেক এ রিপাবলিকান সদস্য সিনেটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্কিংয়ের সদস্য। কমি প্রধান থাকা অবস্থায় অ্যান্ড্র– ম্যাক্যাবে ছিলেন এফবিআইয়ের উপ-পরিচালক।
অন্য দুই প্রার্থী মাইকেল গার্সিয়া এর আগে নিউইয়র্কের প্রসিকিউটর ছিলেন আর বিচার বিভাগের ফৌজদারি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট আটর্নি জেনারেল ছিলেন ফিশার। বর্তমানে একটি আইন কেন্দ্রে কর্মরত আছেন তিনি। ‘কমির ব্যক্তিগত আনুগত্য চাওয়ার তথ্য সঠিক নয়’ : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেডারেল গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সাবেক পরিচালক জেমস কমির কাছে ব্যক্তিগত আনুগত্য চেয়েছিলেন বলে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা নাকচ করে দিয়েছে হোয়াইট হাউস। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব শন স্পাইসার গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। জানুয়ারিতে ক্ষমতা নেয়ার পরে হোয়াইট হাউসে এক নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়ে ট্রাম্প কমির কাছে ব্যক্তিগত আনুগত্য চেয়েছিলেন বলে মার্কিন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। খবর বিবিসির। নিউইয়র্ক টাইমসের খবর অনুযায়ী, জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ওই নৈশভোজে ট্রাম্প ও কমি ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এ সময় ট্রাম্প কমির কাছে বেশ কয়েকবার ব্যক্তিগত আনুগত্য প্রকাশের দাবি করেন। কিন্তু এ দাবির মুখে কোনো ধরনের আনুগত্য প্রকাশে অস্বীকৃতি জানান তিনি। তবে ট্রাম্পের সঙ্গে সবসময় সৎ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন কমি। পরে এ ঘটনা কমি তার দু’জন সহকারীর কাছে বলেন। তাদের বরাত দিয়েই মার্কিন গণমাধ্যম এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এ ঘটনাকেই নিজের পতনের জন্য দায়ী করেছেন সদ্য বরখাস্ত হওয়া জেমস কমি। শুক্রবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যম ও কমির এ অভিযোগ অস্বীকার করে শন স্পাইসার বলেন, ‘এ অভিযোগ ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পুরোপুরি ভিত্তিহীন।’ আলোচিত নৈশভোজের ঘটনাবলী নিয়ে হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সারা হাক্যাবি স্যান্ডার্স বলেন, ‘যে সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য উঠে এসেছে, তাকে আমরা সঠিক মনে করছি না। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এজেন্সি ও এর নেতৃত্বে কর্মরতদের স্বকীয়তা রক্ষাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগত আনুগত্যের প্রত্যাশাও তিনি করেন না।’ প্রেস ব্রিফিং বন্ধের হুমকি ডোনাল্ড ট্রাম্পের : এদিকে, আবারও ডোনাল্ড ট্রাম্পের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে মার্কিন সংবাদ মাধ্যমকে। এফবিআইয়ের প্রধান কমিকে হঠাৎ সরিয়ে দেয়ার সংবাদকে যেভাবে বিশ্বের সামনে এনেছে মার্কিন মিডিয়া তাতেই চটেছেন ট্রাম্প? তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, এভাবে চলতে থাকলে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে নিয়মিত ব্রিফিং বন্ধ করে দেয়া হবে। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্টের রোষের মুখে পড়েছেন সদ্য বরখাস্ত হওয়া এফবিআই প্রধানও। হুমকির সুরে ট্রাম্প বলেন, তাদের মধ্যে হওয়া কথাবার্তা গোপন রাখা এবং মিডিয়ার সামনে তা ফাঁস না করতে বলেছিলাম। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান শিবিরের সঙ্গে রাশিয়ার যোগসাজশের ঘটনাটি সামলাতে অসফল হওয়ায় বরখাস্ত করা হয় কমিকে। তাকে সরানোর পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা। নতুন এফবিআই পরিচালক খোঁজার কাজ অবিলম্বে শুরু করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.