ভেনিজুয়েলায় কোর্ট মার্শাল বিক্ষোভকারীদের

ভেনিজুয়েলায় সামরিক আদালতে বিচার করা হচ্ছে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীর। বিক্ষোভ চলাকালে গত মাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের ওই ভাস্কর্য ভাঙার দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী সোল্লাসে ভাস্কর্যটি ভেঙে রাস্তার পার্শ্বে ফেলে দেয় এবং অপর একদল তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ভাস্কর্য ভাংচুরের ঘটনায় সন্দেহভাজনদের গ্র্রেফতার করে তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। তবে সাধারণ কোনো আদালতে তাদের বিচার করা হচ্ছে না। সামরিক ট্রাইব্যুনালের অধীনে কোর্ট মার্শাল হচ্ছে তাদের। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকার তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ওই সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ আইনে মামলা করেছে। দেশটির সুপ্রিমকোর্টে মাদুরোর বেশ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে প্রেসিডেন্ট মাদুরোর সমর্থকরা সম্প্রতি জাতীয় পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করে। মাদুরো এখন সামরিক আদালতের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন। আর এর অংশ হিসেবে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ও অন্য নাগরিকদের সামরিক আদালতের অধীনে বিচার করছেন। ভাস্কর্য ভাংচুরের মামলায় বন্দিদের আইনি সহায়তা দিচ্ছে পেনাল ফোরাম নামে একটি সংগঠন।
তাদের মতে, গত এপ্রিলে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়া থেকে এ পর্যন্ত ১২০ জন বিক্ষোভকারীকে সামরিক আদালতে বিচার করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অবশ্য প্রভো নামে অপর এক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর মতে, এ সংখ্যা ৯০ জন। উভয় গোষ্ঠীই একমত হয়েছে, যুদ্ধের সময় ছাড়া আর কখনোই দেশটি তার নাগরিকদের সামরিক আদালতে বিচার করেনি। দেশটির কারাবোবো রাজ্যের বিরোধীদলীয় কংগ্রেস সদস্য জুয়ার মিগুয়েল ম্যাথিউস বলেন, ‘সামরিক আদালত আমাদের জনগণের মধ্যে একটা বড় ধরনের ভয়ের বীজ বপন করেছে।’ মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, ভাস্কর্য ভাঙার মামলায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ছাত্র, দোকান মালিক, মেকানিক এবং কৃষক রয়েছেন। বিক্ষোভে ইন্ধন দেয়ার অভিযোগে গত সপ্তাহে কারাকাসে পুরো একটি পরিবারকে সামরিক আদালতের মুখোমুখি করা হয়। বিক্ষোভে নামল দাদা-দাদিরা : এদিকে দেশটির চলমান বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে এসেছেন দেশটির বৃদ্ধ নাগরিকরা। দেশটির সরকারবিরোধী এ বিক্ষোভে শুক্রবার রাজধানী কারাকাসে হাজার হাজার বৃদ্ধ বিক্ষোভকারী অংশ নেন। রাজপথে একটি র‌্যালি বের হলে নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা এবং একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় পুলিশ ভিড় সামলাতে মরিচ স্প্রে ব্যবহার করে। বিক্ষোভকারীরাও পুলিশের বিরুদ্ধে হাত তোলে। কারাকাসের বিশ্ববিদ্যালয় শহর মেরিডা সাধারণত ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভের জন্য পরিচিত।

No comments

Powered by Blogger.