ইরানে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের উত্তপ্ত টিভি বিতর্ক

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্বের টিভি বিতর্কে প্রার্থীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি তার এক প্রতিপক্ষকে ধর্ম ব্যবহার করে নির্বাচনে জেতার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন। এ ছাড়া অন্য প্রতিপক্ষের ওপর তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ তোলেন। পাল্টা রুহানির ওপর ফিরে আসে দুর্নীতি, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি থেকে সুবিধা নেয়ার অভিযোগ। খবর বিবিসি ও আল-জাজিরার। আগামী শুক্রবার ইরানের ১২তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ছয়জন প্রার্থী এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসহাক জাহাঙ্গিরী, তেহরানের মেয়র মোহাম্মাদ বাকের কলিবাফ, ইরানের অভিভাবক পরিষদের সদস্য আগা মিরসালিম, ইমাম রেজার (আ) মাজারের খাদেম সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসি এবং সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা হাশেমি তাবা। শনিবার তারা শেষ টিভি বিতর্কে মুখোমুখি হন। ইরানের জাতীয় টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত এ বিতর্কের বিষয়বস্তু ছিল অর্থনীতি। চার বছরের জন্য দ্বিতীয় মেয়াদে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন রুহানি। বিতর্কে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী ইব্রাহিম রাইসি ও তেহরানের মেয়র বাকেরকে টার্গেট করে অভিযোগের তীর ছোড়েন। রুহানি বলেন, ‘জনাব রাইসি, আপনি যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই আমাকে অপবাদ দিয়েছেন। কিন্তু অনুগ্রহ করে ক্ষমতার জন্য ধর্মকে অপব্যবহার করবেন না।’
প্রেসিডেন্ট রুহানি তার অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাবেক পুলিশ প্রধান কলিবাফের বিরুদ্ধে ছাত্র বিক্ষোভের সময় পুলিশের আক্রমণের অভিযোগ তোলেন। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ইরানের পুলিশ প্রধান ছিলেন কলিবাফ। কটাক্ষ করে রুহানি বলেন, আপনি শিক্ষার্থীদের প্রতি চড়াও হতে ভালোবাসেন। এর জবাবে কলিবাফ ২০১৫ সালে পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তির সমালোচনা করেন। তিন বলেন, কর্মসংস্থানের অভাব, মন্দা ও মুদ্রাস্ফীতির কারণে দেশটি বর্তমানে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। গত চার বছরে কোনো একটি গাছে ফল জন্মাতে দেখা যায়নি, যেটি ভবিষ্যতে দেশের জন্য ইতিবাচক বার্তা বয়ে আনতে পারে।’ অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রাইসি বলেন, গত সরকারের আমলে প্রায় আড়াই লাখ ক্ষুদ্র ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে এবং গরিবদের জন্য শুধু অর্থ পরিশোধের হারই বেড়েছে। রুহানির বিরুদ্ধে রাইসি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বলেন, প্রেসিডেন্ট তার আত্মীয় ও সরকারের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ পণ্য আমদানির অভিযোগ তদন্তে গড়িমসি করছেন। এ ছাড়া রুহানির বিরুদ্ধে পানির দামে সরকারি সম্পত্তি গ্রহণের মতো গুরুতর অভিযোগও আনা হয়েছে। আগামী শুক্রবারের ভোটে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে নির্বাচন দ্বিতীয় পর্ব বা রানঅফ পর্বে গড়াবে। ছয় প্রার্থীর মধ্যে এগিয়ে থাকা দুই প্রার্থী পরের সপ্তাহে রানঅফ ভোটে মুখোমুখি হবেন।

No comments

Powered by Blogger.