আপন জুয়েলার্সের অসহযোগিতা : গ্রাহকরা এখনই স্বর্ণ ফেরত পাচ্ছে না

অন্যতম শীর্ষস্থানীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীপ্রতিষ্ঠান আপন জুয়েলার্স থেকে শুল্ক কর্তৃপক্ষ যে স্বর্ণ আটক করেছে সেখান থেকে গ্রাহকদের স্বর্ণ ফিরিয়ে দেবার বিষয়টি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে তারা সে স্বর্ণ আটক করেছে সেখান থেকে প্রকৃত গ্রাহকদের অনুকূলে স্বর্ণ ফিরিয়ে দেবার জন্য সোমবার নির্ধারিত দিন থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আপন জুয়েলার্সের 'অসহযোগিতার' কারণে এটি আপাতত সম্ভব হচ্ছেনা। গত সপ্তাহে ঢাকায় আপন জুয়েলার্সের কয়েকটি বিক্রয় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৮০ কোটির টাকার স্বর্ণ আটক করে শুল্ক গোয়েন্দারা। ঢাকার বনানীর একটি হোটেলে দুজন ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলের বিরুদ্ধে মামলার পর তাদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানেও হানা দেয় শুল্ক কর্তৃপক্ষ। কর্মকর্তারা বলছেন, যেসব স্বর্ণ আটক করা হয়েছে সেগুলোর পক্ষে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি আপন জুয়েলার্স। আপন জুয়েলার্সের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল স্বর্ণ কেনার জন্য অনেক গ্রাহক এরই মধ্যে তাদের বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, 

আপন জুয়েলার্সের পক্ষ থেকে প্রকৃত গ্রাহকদের তালিকা দেয়ার কথা থাকলেও গতকাল পর্যন্ত তা দেয়া হয়নি। 'ন্যায়বিচারের স্বার্থে' আগামী ২৫ মে মালিক-পক্ষকে স্বর্ণের দোকানে উপস্থিত হয়ে কাগজপত্র বুঝে নিতে পুনরায় সময় দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষ জানায়, এইসব কাগজপত্র অনুযায়ী তালিকা তৈরির পর প্রকৃত গ্রাহকদেরকে জমাকৃত স্বর্ণ ফেরতের জন্য পুনরায় সময় নির্ধারণ করা হবে। বাংলাদেশে শুল্ক গোয়েন্দারা বলছেন, আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা সাড়ে ১৩ মন স্বর্ণের মধ্যে ১০ কিলোগ্রামের মত গ্রাহকদের। গত বুধবার আপন জুয়েলার্সের মালিকদের শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদে সন্তুষ্ট হননি শুল্ক গোয়েন্দারা। কিন্তু সোমবার ২২ মে অর্থাৎ সোমবারের মধ্যে 'জনস্বার্থের বিবেচনায়' গ্রাহকদের স্বর্ণ, গহনা ফেরত দেয়ার ঘোষণা করেন তারা। এর আগে শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন শাখায় রিপেয়ারিং এবং এক্সচেঞ্জের জন্য যেসব গ্রাহক তাদের স্বর্ণ এবং অলংকার গচ্ছিত রেখেছিলেন, তাদেরকে সোমবার বেলা ২টায় রসিদসহ সেগুলো অক্ষত অবস্থায় ফেরত দেয়া হবে।" শুল্ক গোয়েন্দারা আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে যে অসহযোগিতার অভিযোগ করছেন, সে বিষয়ে কথা বলার জন্য আপন জুয়েলার্সের বক্তব্য জানা যায়নি। তবে গত সপ্তাহে আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদ বিবিসি বাংলার কাছে দাবি করেন, চোরাচালানের সাথে তাদের এই পারিবারিক প্রতিষ্ঠান যুক্ত নয়। দিলদার আহমেদ বলেন, "আমাদের ৪০ বছরের ব্যবসা। চোরাচালানের সাথে আমরা যুক্ত থাকবো কেন?" কিন্তু আমদানি না করে এত বড় ব্যবসা কীভাবে চলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুরনো স্বর্ণ রিফাইন (পুনঃব্যবহার) করে এবং বিদেশ থেকে ১০০ গ্রাম করে যে স্বর্ণ আনে, সেটা তাদের কাছে অনেকে বিক্রি করেন। তবে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ বলেন তদন্তে তিনি সহযোগিতা করবেন। সূত্র : বিবিসি

No comments

Powered by Blogger.