হাসান রুহানির বিজয়ে রাতভর নাচগান

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, ভোটাররা চরমপন্থার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন এবং তারা বহির্বিশ্বের সঙ্গে আরও সম্পর্ক বাড়াতে চান। শুক্রবারের নির্বাচনে ৫৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন মধ্যপন্থী রুহানি। ফলে রান অফ বা দ্বিতীয় পর্বের ভোটাভুটিতে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কট্টরপন্থী বিচারক ইব্রাহিম রাইসি পেয়েছেন ৩৮ শতাংশ ভোট। বিজয়ের পর টেলিভিশন ভাষণে রুহানি বলেন, তিনি তার প্রতিপক্ষের সমালোচনাকে শ্রদ্ধা করেন। ২০১৫ সালে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি থেকে দূরে রাখতে ঐতিহাসিক চুক্তি করেন ৬৮ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের সংস্কার প্রচেষ্টা ও দুর্বল অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করায় ঐতিহাসিক এ জয় পেয়েছেন রুহানি। খবর বিবিসি ও এএফপির। রুহানি বলেন, ইরানি জাতি আবারও আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। এ কারণে আমি আগের চেয়ে আরও বেশি দায়িত্ব অনুভব করছি। এ সময় তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা খামেনির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে ইরানিরা সংঘাত ও কট্টরপন্থার বিরুদ্ধে নিজেদের কঠোর অবস্থান জানিয়েছেন। উদারপন্থাকে সমর্থন দিয়েছেন। ভোটের এ ফল প্রমাণ করে, তারা বহির্বিশ্বের সঙ্গে আরও সংযোগ স্থাপন করতে চান। জীবনমানের উন্নতি চান।’ রুহানি বলেন, ইরান জাতীয় স্বার্থ ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদারে আগ্রহী। তিনি বলেন, ইরানের নির্বাচন প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি এ বার্তাই দিচ্ছে যে, বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরতার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বরং গণতন্ত্র ও ধর্মভিত্তিক জনগণের শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমেই এটা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন শেষ হয়েছে।
এখন আমি ইরানি জাতির প্রেসিডেন্ট। এখন আমার প্রত্যেক ইরানির কাছ থেকে সহায়তা প্রয়োজন, এমনকি যারা আমার বিরোধিতা করেন বা আমার নীতির বিরোধিতা করেন।’ এদিকে শনিবার নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর সারারাত তেহরানের খোলা আকাশের নিচে বিরল বিজয়োল্লাস করেছেন রুহানির সমর্থকরা। তেহরানের ভালি আসর স্কয়ারে তরুণ-তরুণীরা নাচ ও গানের মধ্যে বিজয় উদযাপন করেন। এ সময় তারা রুহানির ছবি সংবলিত ফেস্টুন আকাশে উড়ান। ২৭ বছর বয়সী আফসিন বলেন, এ উল্লাস সংস্কারপন্থী কোনো প্রেসিডেন্টের জয়ের উল্লাস। এ বিজয় উৎসবে অংশ নেয়া একদল তরুণ-তরুণী সংস্কারপন্থী মুভমেন্ট পার্টির নেতা মির হোসাইন মাউসাভির পক্ষেও স্লোগান দেন। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি রয়েছেন। অনেকেই আবার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহম্মাদ খাতামির পোস্টার হাতেও স্লোগান দেন। ২৫ বছর বয়সী পেগাহ বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। কারণ আমরা যা চেয়েছিলাম তাই পেয়েছি। যদিও রুহানি তেমনটা নন। কিন্তু তিনি সংস্কার, স্বাধীনতা ও উন্নয়নের পক্ষে।’ আফসিন বলেন, রুহানি যে প্রতিশ্রুতিই দিয়েছিলেন আমরা সেটারই বাস্তবায়ন চাই। এ সময় শতাধিক তরুণ-তরুণী একসঙ্গে চিৎকার দিয়ে ওঠেন।

No comments

Powered by Blogger.