মাশরাফিদের ড্রেসিংরুমে এরা কারা

গত বৃহস্পতিবার এমনই ছিল সাকিবদের ড্রেসিংরুমের চিত্র।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুম দেখে ধাক্কাই খেতে হলো। ভেতরে বিরাট জটলা। তুমুল হইচই। বহিরাগতদের দখলে মাশরাফি-সাকিবদের ড্রেসিংরুম! সাংবাদিকেরা সে ছবি তুলতে গিয়ে নাজেহাল হলেন। শুরু হলো বাগ্‌বিতণ্ডা। বিসিবির সাময়িক নিরাপত্তাকর্মীরা ঝামেলা মেটাবে কী, উল্টো আরও বাড়াল।
সেদিন জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে একটি বিজ্ঞাপনের শুটিং ছিল। ফলে শুটিং ইউনিটের একগাদা কর্মী সেদিন ছিলেন মাঠে। এর মধ্যে ছিলেন অনেক বহিরাগতও, যাঁদের না ছিল ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক, না শুটিংয়ের। খেলা চলুক আর না চলুক, ড্রেসিংরুমে সাধারণত বহিরাগতদের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিতই থাকে। কিন্তু এ দিন ড্রেসিংরুম যেন সেই বহিরাগতদেরই দখলে। সেখানে চলছে আড্ডা, হইচই।
ঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। আজ আরেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পেশাগত দায়িত্বপালনের সময় বিসিবির নিরাপত্তা কর্মী আর এক পুলিশ সদস্যের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হলেন এক সিনিয়র সাংবাদিক। যদিও এ ঘটনায় সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে বিসিবি। কিন্তু অভিযুক্ত কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কি না, জানা যায়নি। বিসিবির এই সাময়িক নিরাপত্তাকর্মীদের আচরণ-ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আগেও।
গত দুটি সিরিজেই দেখা গেছে ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমের আশপাশে, এমনকি ভেতরেও ঢুকে পড়ছে বহিরাগত অনেকে। এসব দেখার যেন কেউ নেই বিসিবিতে। সব মিলিয়ে নিরাপত্তা বিরাট একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে।
বিষয়টি নিয়ে আজ কথা বলতে হলো অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকেও। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, ‘সবকিছুর একটা নিয়ম-নীতি আছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কথা যদি বলেন, সবার একটা কার্ড আছে; এমনকি আমরা খেলোয়াড়ও ড্রেসিংরুমে ঢোকার সময় নিশ্চিত হই কার্ড সঙ্গে আছে কি না। একটা প্রটোকলের ভেতর দিয়েই এই স্টেডিয়ামের সব কিছু চলে। কাউকে যদি শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় সেটা অবশ্যই দুঃখজনক। এটা কিছুতেই কাম্য নয়। শেষ কয়েকটা ম্যাচে দেখেছি, মাঠে অনেক দর্শক ঢুকে গিয়েছে, হয়তো বাইরে থেকে চলে এসেছে। এ ব্যাপারগুলো আন্তর্জাতিক ম্যাচে হলে অন্য দলের খেলোয়াড়রা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারে। তাদের কাছে মনে হতে পারে, এ আবার কেমন!’
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সবাইকে ব্যাপারটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার আহ্বান জানালেন মাশরাফি, ‘নিরাপত্তার দায়িত্বে যাঁরা আছেন, আশা করি তারা খেয়াল করবেন। নিরাপত্তাকর্মী যাঁরা আছেন, তাদের কাজ সব কিছু সুশৃঙ্খলভাবে চালানো। এর মধ্যে কিছু ঘটলে বোঝাপড়ার মাধ্যমে ঠিক করা হবে, সিরিজের আগে এমনই প্রত্যাশা।’
শুধু গত বৃহস্পতিবারের জন্য নয়, প্রতি ম্যাচ শেষেই জাতীয় দলের ড্রেসিংরুম কিংবা এর আশপাশে বহিরাগতদের ভিড় জমছে। এখান থেকে নিরাপত্তাজনিত কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেলে বাংলাদেশের ক্রিকেটেরই ভাবমূর্তিই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। মাশরাফিদের ড্রেসিংরুমের এই ভিড়টা আসলেই কারা?

No comments

Powered by Blogger.