আ.লীগ নেতা মোল্যা ওলিয়ার হত্যা: অস্ত্র মামলায় পরিতোষসহ নয়জন অভিযুক্ত

অভিযোগপত্রে উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ কুমার বিশ্বাসসহ নয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে যশোরের অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোল্যা ওলিয়ার রহমান (৬২) হত্যার ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
গত শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যশোর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এসআই মো. মুরাদ হোসেন এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ কুমার বিশ্বাসসহ নয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ২৩ নভেম্বর নওয়াপাড়া বাইপাস সড়কে মোটরসাইকেলে করে তিন সন্ত্রাসী মোল্যা ওলিয়ারকে গুলি করে হত্যা করে। ওলিয়ার অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও নওয়াপাড়া পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার অভয়নগর প্রতিনিধি, নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য, অভয়নগর শ্রমজীবী সমন্বয় পরিষদ ও নওয়াপাড়া ট্রাক ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন ২৪ নভেম্বর নিহতের স্ত্রী নূরজাহান বেগম অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নামে অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পাশাপাশি যশোর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল খায়ের মোল্যা সাতজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেন। অস্ত্র আইনে করা মামলার তদন্ত শেষে ডিবির এসআই মুরাদ হোসেন শনিবার যশোরে অবস্থিত জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিল্টন হোসেনের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরিতোষ কুমার বিশ্বাস ছাড়া অভিযুক্ত অন্যরা হলেন ডহর মশিয়াহাটি গ্রামের শিশির মণ্ডল, দুর্জয় বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী সুচিত্রা বিশ্বাস, চলিশিয়া গ্রামের অহেদুজ্জামান সুমন, বেদভিটা গ্রামের প্রসেন রায়, নড়াইল সদর উপজেলার কালীনগর গ্রামের আলামিন ফারাজী ওরফে আলা ওরফে সুমন, খুলনার ফুলতলার উত্তর দামোদর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম রুবেল ও ফুলতলা এম এম কলেজ রোডের রাকিবুল ইসলাম।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর রাতে যশোরের ডিবি পুলিশ টহলে বের হয়। রাত একটার দিকে তারা জানতে পারে মনিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের গৌতম মহারাজের মাছের ঘেরে আওয়ামী লীগের নেতা ওলিয়ার হত্যা মামলার আসামিরা অবস্থান করছেন। রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ মাছের ঘের থেকে জাহিদুল ইসলাম ওরফে রুবেলকে আটক করে। অন্য চারজন পালিয়ে যান। জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল ওলিয়ার হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সুচিত্রার বাড়ি থেকে দুটি বিদেশি বন্দুক ও ১৮টি গুলি উদ্ধার এবং শিশিরকে আটক করে পুলিশ। এরপর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাধারাম বিহারির বাড়ি থেকে একটি এবং সুচিত্রার বাড়ি থেকে আরেকটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। মামলার তদন্ত চলাকালে শিশির আদালতে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। চেয়ারম্যান পরিতোষ ও প্রসেন উদ্ধার হওয়া ওই অস্ত্রগুলো রাখতে দিয়েছিলেন বলে জানান। এ অস্ত্র দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ওলিয়ারকে হত্যা করা হয় বলে চেয়ারম্যান ও প্রসেন তাঁকে জানিয়েছিলেন বলে শিশির জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন।

No comments

Powered by Blogger.