চট্টগ্রামের গ্লোরি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে আবার শ্রমিক অসন্তোষ

শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে গতকাল চট্টগ্রাম নগরের গ্লোরি
ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। মারধর করার
অভিযোগে পুলিশ একজনকে আটক করে নিয়ে যায় l প্রথম আলো
চট্টগ্রাম নগরের পোশাক কারখানা গ্লোরি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিকেরা ১০ দিনের ব্যবধানে গতকাল সকালে আবার বিক্ষোভ করেছেন। এবার দুই সহকর্মীকে মারধরের প্রতিবাদে কারখানার সামনে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় কারখানার তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ মফিজকে আটক করেছে পুলিশ। আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা তাঁকে মারধরের চেষ্টা করেন। ২ জুলাই কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে ও ওভারটাইমের টাকা পরিশোধের দাবিতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন কারখানাটির শ্রমিকেরা। তবে গতকাল মূল সড়ক অবরোধ করা হয়নি। কারখানাটি বায়েজিদ সড়কের চা বোর্ড গলিতে অবস্থিত।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে কারখানার পঞ্চম তলায় কাজ করার সময় আয়রনম্যান মোহাম্মদ তারেক ও মেশিন অপারেটর সুমি আক্তারকে মারধর করেন তত্ত্বাবধায়ক দেলোয়ার হোসেন ও মোহাম্মদ মফিজ এবং টেকনিশিয়ান মোহাম্মদ হারুন। মুহূর্তের মধ্যে এ খবর পুরো কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ রেখে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প পুলিশের দুই প্লাটুন সদস্য ও বায়েজিদ বোস্তামী থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে পুলিশ মোহাম্মদ মফিজকে আটক করে। কারখানাটি সানম্যান গ্রুপের মালিকানাধীন। এখানে প্রায় ১ হাজার ৮০০ শ্রমিক কাজ করেন। সানম্যান গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সাজিদুল হক দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কারখানায় এসে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর শ্রমিকেরা কাজে ফিরে যান।
কারখানার মহাব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, দুই শ্রমিককে মারধর করায় তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ মফিজকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
ইয়ংওয়ানে কর্মবিরতি: চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার (ইপিজেড) ইয়ংওয়ান সিইপিজেড লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ওয়াইসিএল ইউনিটে গতকাল সকালে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির বেশির ভাগ শ্রমিক প্রায় এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন।
ঈদে আট দিন ছুটির দাবিতে শ্রমিকেরা বেলা ১১টার দিকে এ কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ পাঁচ দিনের বেশি ছুটি না দেওয়ার পক্ষে। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ১১ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। তাঁরা কারখানার ভেতরে অবস্থান করলেও বেশির ভাগ কাজ করেননি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকেরা কাজে ফিরে যান। এ বিষয়ে ইয়ংওয়ানের কোনো কর্মকর্তা উদ্ধৃত করে মন্তব্য করতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করে একজন বলেন, শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি তাঁদের কোরিয়ার প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিদেশি ক্রেতাদের বাধ্যবাধকতার কারণে এবার ঈদে ছুটি বেশি দেওয়া যাচ্ছে না।

No comments

Powered by Blogger.