সৌদিতে বাংলাদেশের শ্রমিক নিয়োগে বিলম্বের আশঙ্কা

বেতন নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। সৌদি আরবের প্রভাবশালী পত্রিকা সৌদি গ্যাজেটের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। গতকাল পত্রিকাটির শীর্ষ সংবাদ হিসেবে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয় তাদের অফিসিয়াল টুইটারে জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে কিছু প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলে শিগগিরই তারা বাংলাদেশ থেকে নতুন করে শ্রমিক আনার ঘোষণা দেবে। সর্বনিম্ন মাসিক ৮০০ সৌদি রিয়াল মজুরিতে বাংলাদেশী শ্রমিক আমদানি করতে মঙ্গলবার ঢাকায় সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয় একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি আহমেদ আল ফিহাইদ সৌদি সরকারের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ সফররত ১৯ সদস্য দলের প্রধান হিসেবে দেশটিতে অবস্থান করছেন। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যয়ের বিষয়টি তারা নিয়ন্ত্রণ করবেন। এদিকে বাংলাদেশের স্থানীয় গণমাধ্যমের একাংশের সামনে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে বলতে শোনা গেছে, সৌদি আরবে বাংলাদেশী শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ১২০০-১৫০০ সৌদি রিয়াল হওয়া উচিত। তিনি বলেন, আমরা সৌদি পক্ষের সঙ্গে এ বেতন-ভাতায় সম্মত হয়েছি। যদি তারা এ অঙ্কে সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না হন, তাহলে কোন কর্মী এ দেশ ছেড়ে যাবে না। মন্ত্রী আরও জানান, বাংলাদেশ থেকে প্রতি মাসে ১০ হাজার কর্মী সৌদি আরব যাবেন। বেশির ভাগ শ্রমিক হবেন বাসাবাড়ির সহযোগী কর্মী। প্রধানত গাড়িচালক ও গৃহপরিচারিকা।
সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি বলেছেন, তার দেশ গত বছর ১৩ লাখ বিদেশী কর্মী নিয়োগ করেছে। ২০১৫ সালেও সমপরিমাণ কর্মী নিয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, বিদেশী শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বাংলাদেশী গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বিদেশে দেশটির ৯১ লাখ ৭০ হাজার শ্রমিকের ২৯ শতাংশই সৌদি আরবে। প্রসঙ্গত, সৌদি আরব ২০০৮ সালে বাংলাদেশ থেকে নির্মাণ ও কৃষিকর্মী নিয়োগ বন্ধ করে দেয়। এরপর বাংলাদেশ থেকে প্রতি মাসে জনশক্তি আমদানি ১৫ হাজার থেকে ১০ হাজারে নেমে আসে। ২১শে জানুয়ারি শ্রমমন্ত্রী আদেল ফাকেইহ ঘোষণা দেন, বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানি শিগগিরই আবার শুরু হবে। বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে সৌদি আরবে ১৩ লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক রয়েছে। অন্যান্য পরিসংখ্যানে ওই সংখ্যা ২৬ লাখ ৩০ হাজার বলা হয়ে থাকে।

No comments

Powered by Blogger.