সার্জেন্ট জহুরুল হক চিত্রাঙ্কনে শিশুরা তুলে ধরবে বাংলাদেশকে

(শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হককে পাকিস্তানীরা গুলি এবং বেয়নেটের আঘাতে হত্যা করে ১৯৬৯ এর ১৫ ফেব্রুয়ারি। জহুরুল হকের কথা শিশু-কিশোরদের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই ছবি আঁকার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। শিশু-কিশোরদের আঁকা ছবির উপজীব্য বিষয় হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ। ছবি: মানসুরা হোসাইন) পাকিস্তানি স্বৈরশাসন, পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে সোচ্চার ছিলেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে বন্দী ছিলেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে। বন্দী অবস্থায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী গুলি এবং বেয়নেটের আঘাতে সার্জেন্ট জহুরুল হককে হত্যা করে ১৯৬৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি।
১৯৩৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জন্ম জহুরুল হকের। তিনি ছবি আঁকতে ভালোবাসতেন। শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হকের কথা শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁর পরিবার এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর যৌথভাবে শিশু-কিশোরদের ছবি আঁকার প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এ ধরনের আয়োজন চলছে ১৫ বছর ধরে। কাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে সে প্রতিযোগিতা।
আজ বৃহস্পতিবার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা। বিগত বছরগুলোতে যেসব শিশু–কিশোর প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে, তাদের সেই ছবিগুলো দিয়েই সাজানো হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণ। ছবিতে শিশুরা মুক্তিযুদ্ধসহ এঁকেছে পুরো বাংলাদেশকে নিয়ে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। নার্সারি থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিযোগিতা উন্মুক্ত। তারা আঁকতে পারে যা খুিশ। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আঁকার বিষয় ‘স্বাধীনতা’। যারা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চায়, তাদের বোর্ড, রং, তুলি এবং কেউ চাইলে খাবার পানি সঙ্গে আনতে পারে বলে জানালেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুলের ভাইয়ের মেয়ে নাজনীন হক। তিনিই জহুরুল হকের নামে পারিবারিক ট্রাস্টের আওতায় এ প্রতিযোগিতা আয়োজনের সার্বিক দায়িত্ব পালন করছেন।
এবারের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কাল (শুক্রবার) আসলে কতজন শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে, তা নিয়ে বেশ চিন্তিত বলেই জানালেন নাজনীন হক।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর রফিকুল ইসলাম জানালেন, কাল সকাল আটটা থেকে রেজিস্ট্রেশন। সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে প্রতিযোগিতা। তারপর বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ক্রেস্ট ও মুক্তিযুদ্ধের বই। পরিবারের পক্ষ থেকেও থাকবে বিশেষ পুরস্কার। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সবার জন্যই থাকবে সনদ এবং বই।
এখানেই শেষ নয়। প্রতিযোগিতার পর শিশু-কিশোরেরা ঘুরে দেখবে পুরো মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। তারা অংশ নেবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও।

No comments

Powered by Blogger.