সেনাবাহিনী ক্ষমতা নেয়ার সাহস পাবে না : কূটনীতিক রীতি ভঙ্গের জন্য যা দরকার করব : শেখ সেলিম

বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশী কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিনিয়র সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, বিদেশী কূটনীতিকদের বলি, কূটনীতিক শিষ্টাচার মেনে চলেন। হু ইজ খালেদা জিয়া? একজন অনির্বাচিত ব্যক্তির সঙ্গে এতো কিসের কথা। আপনাদের কোন কথা থাকলে সরকারের সাথে বলেন, সংসদের নির্বাচিত বিরোধী দলের সাথে বলেন। এর বাইরে যদি কিছু করতে চান, এটা শেখ হাসিনার নির্বাচিত সরকার। কূটনীতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করার জন্য যেটা করার দরকার সেটা করব। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স¦াধীন করেছি। সেদিনও আপনারা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ছিলেন না। আমরা নিজেদের মতো করেই যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি। তাই পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, কোন বিদেশী প্রভাব চলবে না।
সোমবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে শেখ সেলিম এ কথা বলেন। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন বৈঠকে সভাপতিত্ব করছিলেন।
বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধের সমালোচনা করে শেখ সেলিম আরো বলেন, অবরোধ হরতালের নাম দেশব্যাপী জ্বালাও পাড়ও নাশকতা চালিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ভাবছেন, তৃতীয় কোন শক্তি এসে উনাকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবেন। কিন্তু সেই দিন আর নেই। সেনাবাহিনী এখন আর কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। আর কোন জুনিয়র হোমরা চোমরা পুচকে (জুনিয়র) আর্মি অফিসার উনাকে আশ্বাস দিলে তাতে লাভ হবে না, ক্ষমতায়ও বসাতে পারবে না। সেনাবাহিনী আর কোন দিন অবৈধভাবে ক্ষমতা নেয়ার সাহস পাবে না, কারণ অবৈধভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করলে কেউ তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মৃত্যুদন্ড।
সুশীল সমাজের সমালোচনা করে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, তারা কিসের সুশীল? নাগরিক কমিটি অপরাধীদের আড়াল করতে সংলাপের কথা বলছে। এদের কারা সুশীল বানিয়েছে? নিজেরা নিজেদের সুশীল দাবি করছেন তারা। এরা নিজেরা ঘরে বসে নিজেদের সুশীল বানিয়েছে। জঙ্গি তৎপরতায় যারা উস্কানি দেবে, তারা টকশো করুক আর মিষ্টি শো করুক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। শেখ সেলিম বলেন, তারা অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় আসায় বিশ্বাস করে। কারণ অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় এলে দু’একটি ভালো কথা বলে উপদেষ্টা হওয়া যায়।
মাহমুদুর রহমান মান্না ও সাদেক হোসেন খোকার কথোপকথনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সেলিম বলেন, একজন বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেললে সরকার উৎখাত করা যাবে। সরকার উৎখাত করে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে। তাদের এই স্বপ্ন কোনদিনই বাস্তবায়িত হবে না।
শেখ সেলিম বলেন, শেখ হাসিনা কারো সঙ্গে কোন আলোচনা করবে না। জঙ্গীদের সঙ্গে কোন আলোচনা হতে পারে না। টুইন টাওয়ার ধ্বংসকারীদের সঙ্গে বুশ কোন আলোচনা করেনি। খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্র ইসলাম ও মানবতার শক্র আখ্যায়িত করে শেখ সেলিম বলেন, তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা কালেও জঙ্গী তৎপড়তা চালায় ক্ষমতার বাইরে থেকেও চালায়। উনি (খালেদা জিয়া) হচ্ছেন সেই নেত্রী, জামায়াত যেটা বলে সেটাই তিনি করেন। সুশীল সমাজের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এরা কখনো বাংলাদেশের পক্ষে ছিল না। একাত্তুরে এরা পাকিস্তানের পক্ষে ওয়ান ইলেভেনের সময় এরা আর্মি ব্যাকড সরকারের পক্ষে থাকে। এরা জঙ্গীবাদকে উৎসাহিত করছে। শেখ সেলিম খুনী ও জঙ্গীবাদের উত্থানের জন্য জিয়াউর রহমানকে দায়ী করে বলেন, জিয়া জেল হত্যার বিচার বিচার বন্ধ করেছিল। ২১ হাজার যুদ্ধাপাধীকে ক্ষমা করে দিয়ে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছেন। খালেদা জিয়াও ৭১-৭৫-এর খুনীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুনর্বাসন করেছেন।
রাস্ট্রপতির ভাষনের ওপর এছাড়াও এডভোকেট প্রমোদ মানকিন, সানজিদা খানক, বেগম সালমা ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল জ্যাকব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

No comments

Powered by Blogger.