সাইকেলের ডানায় ভর করে...

মাথা থেকে পা পর্যন্ত কাপড়ে ঢাকা নারী এখন আফগানিস্তানের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তালেবান শাসন থেকে শুরু হয়েছে নারীর এই পশ্চৎপদযাত্রা। শুধু পোশাকেই নয়, নারীকে অবদমনের সব কায়দা-কানুনই বহাল আছে দেশটিতে। তারপরও কিছু নারী বেরিয়ে এসেছে রাজনীতি, শিক্ষায় ও সংস্কৃতিতে। খেলাধুলায়ও তারা পিছিয়ে থাকছে না। অথচ 'সোভিয়েত আগ্রাসনের' সময়ও আফগান নারীদের জীবন ছিল অন্যরকম। তারা তখন ছোট পোশাক পরত। নাইট ক্লাবে যেত। কোন বাধা ছিল না তাদের। ইসলামের নামে যখনই যে ক্ষমতায় এসেছে প্রথম খড়গটা পড়েছে নারীর ওপরই। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে সেই আফগানিস্তানের নারীরা ফিরতে শুরু করেছে। অঅফগান নারীদের বাড়ির বাইরে গিয়ে সাইকেল দাবড়ে বেড়ানোর কথা কিছু দিন আগেও কেউ ভাবতে পারেনি। কিন্তু ভেবেছিলেন পেশাদার আফগান সাইক্লিস্ট আবদুল সাদিক। সাদিকের উৎসাহ ও চেষ্টায় কিছু আফগান নারী এখন সাইকেল চালনা নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। সাইকেল চালিয়ে ভবিষ্যতের তারকা হতে চান তারা। আবদুল সাদিক রাজধানী কাবুলে কয়েকজন মেয়ে নিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি সাইক্লিস্ট দল। উত্তরাঞ্চলের অব্যবহৃত একটি সড়কে সপ্তাহে তিন দিন প্রশিক্ষণ দেন তাদের। কাজটা কিন্তু এত সহজে হয়নি। অনেক কষ্টে পরিবারকে বুঝিয়ে তিনি কাজটি করেছেন। দলের সদস্য মারজান বলেন, বাবা যদি মেয়েকে বাধা নাও দেন, ভাই বা চাচা-মামারা তাকে বাধা দেবেন। ১৬ বছর বয়স জাহরা আলীজাদা দলের অন্যতম তারকা হয়ে উঠেছেন। তিনি বলছিলেন একজন মেয়ে যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যায় লোকজন তাকে হয়রানি করে কিন্তু তুমি যদি সাইকেলে চড়ে বের হও তাহলে তারা নিশ্চিতভাবেই তোমাকে কাউন্ট করবে। যুক্তরাষ্ট্রের চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান মাউন্টেইন টু মাউন্টেইন-এর প্রতিষ্ঠাতা শ্যানন গালপিন বেশ কয়েক বছর ধরে আফগানিস্তানে ত্রাণ কাজে অংশ নিয়েছেন এবং দেশজুড়ে সাইক্লিং করেছেন। তিনি বলেন, সাইক্লিং হচ্ছে নারী অধিকার আন্দোলনের ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাইক হচ্ছে স্বাধীনতা আন্দোলন এবং স্বাধীনভাবে ভ্রমণের অন্যতম প্রতীক।
ডেস্ক প্রতিবেদক, সূত্র : বিবিসি নিউজ

No comments

Powered by Blogger.