প্রান্তসীমায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ

নির্বাচনের বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে বাংলাদেশ প্রান্তসীমায় দাঁড়িয়ে। রাজধানীতে পুলিশ সব ধরনের র‌্যালি নিষিদ্ধ করেছে। বিরোধী দলীয় নেতাকে তার অফিস থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। তাকে প্রতিরোধ করা হচ্ছে। অন্যদিকে সারাদেশে বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ কথা লিখেছে বার্তা সংস্থা এপি। এতে আরও বলা হয়েছে, বড় বিরোধী দলীয় জোট গত বছর নির্বাচন বর্জনের বার্ষিকী পালনকে সামনে রেখে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াকে পুলিশ তার অফিসে কর্ডন করে রেখেছে শনিবার দিবাগত রাত থেকে। তবে কর্তৃপক্ষ বলেছে, তার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আজ রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সহ দেশে বিভিন্ন সস্থানে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন অনেকে। এপি লিখেছে, এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোন মন্তব্য করে নি পুলিশ। অন্যদিকে রাজধানীতে বাসে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা আগুন দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা বেশ কিছু যানবাহনও ভাঙচুর করে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তাকে অবরুদ্ধ করা হয় নি। ঢাকার নয়া পল্টনে খালেদা জিয়ার দলের প্রধান কার্যালয় তালাবদ্ধ করেছে পুলিশ। সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে। ডিএমপি বলেছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত রাজজধানীতে র‌্যালি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সোমবার সহিংসতা ও সংঘর্ষের আশঙ্কায় এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আজ রাত থেকে দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ঢাকা। সহিংসতার আশঙ্কায় ঢাকামুখী বাস ও ফেরি, লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করার আহ্বান আবারও জানিয়েছেন খালেদা জিয়া। তিনি নতুন নির্বাচন দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ২০১৯ সালের আগে কোন নির্বাচন হবে না। এ সরকারের মেয়াদ ৫ বছরের। নির্বাচন তদারকির জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি ফর্মুলা নির্ধারণে খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার জোট একমত হতে ব্যর্থ হওয়ার মধ্যে নির্বাচন কমিশন ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন করে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। দেশে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলে বিশৃঙ্খল পরিসিস্থতি। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা ধারাবাহিকভাবে হামলা, হরতাল পালন করতে থাকে। এতে ২০১৩ সালে নিহত হন প্রায় ৩০০ মানুষ। খালেদা জিয়া ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু তিনি শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরে ব্যর্থ হন। তারই ধারাবাহিকতায় সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনের পর ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হন শেখ হাসিনা।

No comments

Powered by Blogger.