গুলশান কার্যালয়েই রাত কাটালেন খালেদা, ফখরুলের বাসায় পুলিশ, ঢাকায় নিষেধাজ্ঞা, ২০ দলে বি চৌধুরী

পুলিশি বাধায় গুলশান কার্যালয়েই রাত কাটালেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এখান থেকেই তিনি আন্দোলনের পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন বলে জানা গেছে। তার সঙ্গে রয়েছেন মহিলা দলের কয়েকজন নেত্রী। শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে খালেদা জিয়া বাসা থেকে নিজ কার্যালয়ে আসেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে কার্যালয়ে থেকে বের হওয়ার পথে পুলিশ তাকে বাধা দেয়। পরে তিনি কার্যালয়েই থাকার সিদ্ধান্ত নেন। মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা জানান, রাত পৌনে দুইটার দিকে খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসা থেকে তার গৃহকর্মী বেশ কিছু ব্যবহারের ব্যক্তিগত কাপড়-চোপড় ও অন্যান্য সরঞ্জামসহ গুলশান কার্যালয়ে আসেন। এ সময় একটি ছোট সাইজের ট্রাকে করেও কিছু সরঞ্জাম আনা হয়। শনিবার রাত থেকে কার্যালয়ে খালেদার সঙ্গে আছেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, সাবেক সংসদস সদস্য সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, রেহেনা আক্তরা রানু, রাশেদা বেগম হিরা, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ঢাকা মহানগর মহিলা দলের সুলতানা ইয়াসমি প্রমুখ।
ফখরুলের বাসায় পুলিশ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসার সামনেও অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। রাতে রাজধানীর উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর সড়কের ২৩ নম্বর বাড়ি তল্লাশি করেছে পুলিশ। তবে সে সময় বাসায় ছিলেন না ফখরুল। রোববার ভোর রাত ৩টার দিকে তার বাসার সামনে অবস্থান নেয় পুলিশ। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশ সদস্যরা তার বাসায় ঢুকে আধা ঘণ্টা ব্যাপী তল্লাশি চালায়। এরপর থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি গাড়ি ফখরুলের বাসার কাছে অবস্থান করছে। তবে শুক্রবার থেকেই ফখরুল বাসার বাইরে আছেন। এদিকে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে তার পথ আটকায় পুলিশ। কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে আড়াআড়ি করে একটি ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখা হয়, যা সরানো হয়েছে সকাল ৬টার দিকে। রাত থেকে গুলশানের কার্যালয়েই অবরুদ্ধ হয়ে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
ঢাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা
৫ই জানুয়ারি দুই জোটের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে সামনে রেখে ঢাকায় সব ধরণের সভা-সমাবেশ ও জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। আজ দুপুরে ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার বিকাল পাঁচটা থেকে পরবর্তী নির্দেশনা দেয়ার আগ পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। গণতন্ত্রের কালো দিবস হিসেবে বিএনপি এবং গণতন্ত্র রক্ষা দিবস হিসেবে আওয়ামী লীগ এদিন ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দেয়ায় গত দুই দিন ধরে উত্তেজনা চলছে। দুই জোটই রাজপথে নামার ঘোষণা দেয়। গতকাল রাতে বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত রুহুল কবির রিজভীকে আটক করে পুলিশ। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার কার্যালয় থেকে নয়াপল্টনের কার্যালয়ে রিজভীকে দেখতে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকেও আটকে দেয় পুলিশ। খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের সামনের রাস্তা পুলিশের গাড়ি দিয়ে আটকে রাখা হয়। এরপর থেকে খালেদা জিয়া ওই কার্যালয়েই অবস্থান করছেন। কার্যালয়ের বাইরে পুলিশের কড়া পাহারা রয়েছে।
এখন থেকে ২০ দলক পুরোদমে সমর্থন করবেন বি চৌধুরী
বিএনপি চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে গুলশান কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার মুখে পড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি প্রফেসর ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। এ সময় তিনি সাংবাদিকেদের বলেন, আগে ২০ দলকে সমর্থন না করলেও এখন থেকে পুরোদমে সমর্থন করবেন। খালেদার সঙ্গে দেখা করতে রোববার বেলা ১২টার দিকে গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে যান বদরুদ্দোজ্জা চৌধুরী। তাকে পুলিশ কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দিলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। উপস্থিত সাংবাদিকদের বিএনপির সাবেক এই নেতা বলেন, “আমি একজন সিনিয়র সিটিজেন এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি। আমাকে দেখা করতে দেয়া হয়নি। পুলিশের এহেন আচরণ এবং বিরোধী দলীয় নেত্রীকে এভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা গণতন্ত্রের জন্য অশুভ সঙ্কেত বলে আমি মনে করি।” বিএনপির ৫ জানুয়ারির কর্মসূচির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে তা সফল করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান বি চৌধুরী। এরপর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই এলাকা ছেড়ে যান সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।

No comments

Powered by Blogger.