তারেক ও সালামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল ইটিভির মালিক আবদুস সালামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি (নং-১৩) দায়ের করা হয়। থানার এসআই বোরহান উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত রোববার ৫ই জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা ও কালো দিবস উপলক্ষে পূর্ব লন্ডনের অট্রিয়াম অডিটরিয়ামে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন তারেক রহমান। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে তারেক রহমান তার বক্তব্যে দেশের বিচার বিভাগ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করেছে যাতে জনমনে হিংসার উদ্রেক হয়েছে। এছাড়া ফেরারি আসামি হিসেবে তারেক রহমানের বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচার করে ইটিভির চেয়ারম্যান আবদুস সলামও রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করেছেন। এজন্য তারেক রহমান ও আবদুস সালামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে তারেকের বিরুদ্ধে মামলা
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে জানান, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেয়ায় মানহানির অভিযোগে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সৈয়দ মাশফিকুল ইসলামের আদালতে মামলাটি করেছেন আওয়ামী পর্যটন লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বশির হোসেন। এ নিয়ে চট্টগ্রামে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়ালো পাঁচটিতে।  গত ৫ই জানুয়ারি এবং এর আগে ১৫ই ডিসেম্বর লন্ডনে তারেক রহমানের দেয়া বক্তব্যে মানহানির অভিযোগে আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করে তীব্র বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০, ৫০১ ও ৫০৪ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে। এ নিয়ে তারেকের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে মোট পাঁচটি মামলা করা হলো। এর আগে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দুটি এবং মানহানির অভিযোগে দুটি মামলা করা হয়।
মিডিয়ায় ‘সরকারি হস্তক্ষেপে’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির উদ্বেগ
গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে সরকারি হস্তক্ষেপে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন ও সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন গতকাল এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা জানতে পেরেছি, গত কয়েক দিনে সরকার গণমাধ্যমের ওপর নানা নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সরকার ক্যাবল অপারেটরদের দিয়ে কৌশলে একুশে টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। চ্যানেলটির চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে গভীর রাতে এমন একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে যে মামলায় তিনি আসামি ছিলেন না। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর ওপর অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এসব চ্যানেল যেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংক্রান্ত লাইভ সম্প্রচার না করে। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের জনপ্রিয় একটি টকশো অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অন্যান্য টকশোতেও জনপ্রিয় আলোচকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। একজন রাজনীতিবিদের বক্তব্য প্রচারের ওপর আদালত থেকে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আমরা মনে করি এসব পদক্ষেপ সংবিধান প্রদত্ত বাক্স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করছে। আমরা এসব পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, অতীতে গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরে কারও শেষ রক্ষা হয়নি। বর্তমান অনির্বাচিত সরকারেরও হবে না।

No comments

Powered by Blogger.