শ্রীলঙ্কার নির্বাচনে জয় দেখতে পাচ্ছেন দুই প্রার্থীই- ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি

(শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো থেকে ১৯৫ কিলোমিটার দূরের শহর তাঙ্গালার একটি কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ সারি l ছবি: এএফপি) শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোট দিয়েছেন ভোটাররা। ভয়ভীতি দেখানোর খবর বেরোনোর পর ভোট কম পড়বে বলে অনুমান করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। গতকালের নির্বাচনে বরং বেশ কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। খবর এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্সের।
শ্রীলঙ্কার এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের (৬৯) বাঁচা-মরার লড়াই হিসেবে দেখা হচ্ছে এ নির্বাচনকে। এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ১৯ প্রার্থী। ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী আচরণ, দুর্নীতি এবং জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার জন্য ক্রমশ রাজাপক্ষের জনসমর্থনে ভাটা পড়ে। নির্বাচনের অল্প দিন আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাইথ্রিপালা সিরিসেনা (৬৩) পক্ষ ত্যাগ করে বিরোধী জোটের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নামার পর দৃশ্যপট পুরোই পাল্টে যায়। রাজাপক্ষে গতকাল নিজের ভোটটি ব্যালটবাক্সে ফেলার পর বলেছেন, একটি ‘প্রশ্নাতীত জয়’-এর ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী। নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ থাকবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। জয়ের ব্যাপারে উচ্চাশা ব্যক্ত করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সিরিসেনাও। একটি কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার পর তিনি বলেন, ‘আমি জয় দেখতে পাচ্ছি। সবখানেই আমাদের পক্ষে সমর্থন রয়েছে।’ জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হলে ‘নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি’ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। প্রাথমিক তথ্যে ভোট পড়ার হার কমবেশি ৭৫ শতাংশ হতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সংখ্যালঘু তামিল-অধ্যুষিত উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে ভোটারদের উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এসব এলাকার মানুষ অতীতে জাতীয় নির্বাচন বর্জন করলেও এবার সেখানকার ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি। এটাই রাজাপক্ষের জন্য মাথাব্যথার বড় কারণ হয়ে দাঁড়াতে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার ‘লৌহমানব’ হিসেবে পরিচিত রাজাপক্ষে গত নভেম্বরে যখন আগাম নির্বাচন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তখন তাঁর তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হওয়ার বিষয়টি সময়ের ব্যাপার বলে মনে হয়েছিল। কয়েক দশকের তামিল বিদ্রোহ গুঁড়িয়ে দেওয়ার কৃতিত্বের দাবিদার হিসেবে রাজাপক্ষের সেটা প্রাপ্য বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছিল। নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ‘ক্যাম্পেইন ফর ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশনস’-এর প্রধান কারথি থেনাকুন বলেন, ‘আমরা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর ভেতরে ভোট দেওয়ায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখতে পেয়েছি।’

No comments

Powered by Blogger.