ঢামেকের সিসিইউতে সিলেটের মেয়র

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসা নিচ্ছেন। বুধবার ভোররাতে হবিগঞ্জ থেকে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়। তিনি ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরীর অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর আগে আরিফুল হক চৌধুরী হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে বুকে ব্যথা অনুভব করেন। এ সময় তাকে হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে সদর হাসপাতালে আনা হয়। সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হিসেবে তিনি কারাগারে বন্দি ছিলেন। কারাগার সূত্র জানায়, বুধবার রাত ৯টার দিকে আরিফুল হক চৌধুরী বুকে ব্যথা অনুভব করেন। কারা কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার অবস্থার আরও অবনতি হলে রাত ১০টায় তাকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় পুলিশের একটি টিম। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবাশিস্‌ দাস জানিয়েছেন, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বুকে ব্যথা হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এছাড়াও তার ব্লাড প্রেসার ওঠানামা করছিল। তাই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। এদিকে ঢামেকের সিসিইউতে ভর্তি হওয়ার পর ওই বিভাগের সামনে সার্বক্ষণিকভাবে ৬ জন পুলিশ সদস্য পাহারায় রয়েছেন। তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী বলেন, আরিফুল হক চৌধুরীর ৪-৫ মাস আগেও একবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। এ ধরনের রোগীকে বেশ সাবধানে থাকতে হয়। ইদানীং ওনার প্রেসার কন্ট্রোলে ছিল না। ব্যথাটাও  উঠেছিল। পুরোপুরি সুস্থ না হলেও এখন অনেকটা স্থিতিশীল। প্রেসার কন্ট্রোলে আনা হয়েছে। ব্যথাও  কমেছে। তাকে এখন ক্লোজ সুপারভিশনে রাখতে হবে। গত ২১শে ডিসেম্বর কিবরিয়া হত্যা মামলার ৪র্থ চার্জশিট গ্রহণ করে আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়। গত ৩০শে ডিসেম্বর তিনি হবিগঞ্জের আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলে পাঠায়। জেলে যাওয়ার একদিনের মধ্যেই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েক মাস আগে আরিফুল হক চৌধুরী গুরুতর অসুস্থ হলে তার হার্টে রিং বসানো হয়। এরপর থেকে তিনি অনেকটা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছিলেন না।
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে জানান, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে অসুস্থতার কারণে হবিগঞ্জ কারাগার থেকে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার রাত ১০টায় বিষয়টি নিশ্চিত করে হবিগঞ্জের এএসপি (সদর) মাসুদুর রহমান মনির জানান, সন্ধ্যায় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বুকে ব্যথা অনুভব করলে জেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে অবগত করেন। তিনি জানান, প্রথমে তাকে কারাগারে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. দেবাশিস্‌ দাস প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেয়া হয়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার তাকে রেফার করেন। পরে রাত সোয়া ১০টার দিকে তাকে কড়া নিরাপত্তায় একটি এম্বুলেন্সযোগে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কারাগারের চিকিৎসক সূত্রে জানা যায়, মেয়র আরিফুল হকের প্রেসার, ডায়াবেটিস ও হার্টের সমস্যা রয়েছে। তার হার্টে রিং লাগানো রয়েছে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। সূত্রে আরও জানা যায়, একই মামলায় জেলে থাকা অপর আসামি হবিগঞ্জ পৌরসভার  মেয়র আলহাজ জি কে গউছ হবিগঞ্জ কারাগারে সুস্থ আছেন। তবে আরিফুল হক অসুস্থ হওয়ার পর টেনশনে তার প্রেসার কিছুটা বেড়ে যায়। এছাড়াও পেটে কিছু ব্যথা রয়েছে তার। চিকিৎসক জানান, বুধবার রাতে জি কে গউছের প্রেসার ছিল ১৪০/১০০। প্রস্রাবে কিছু সমস্যা রয়েছে। তাকে ঘুমের জন্য ওষুধ দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মঙ্গলবার সকালে হবিগঞ্জ আমলি আদালত ১-এ আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। কিন্তু আদালত তার তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। রোববার একই আদালতে জি কে গউছ-ও আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিন নামঞ্জুর হয়।

No comments

Powered by Blogger.