বিএনপির বিক্ষোভ পুলিশি বাধা, লাঠিচার্জ

সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। রাজধানীর বকশীবাজারে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগের হামলা, খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার ও সারা দেশে খুন-গুমের প্রতিবাদে এ কর্মসূচ পালন করে বিএনপি। এ সময় কোথাও কোথাও পুলিশ বাধা দিয়েছে। লাঠিচার্জ করেছে নেতাকর্মীদের। বিস্তারিত মানবজমিন প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টে-  
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি শহরের ডিআইটিতে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল বের করে। মিছিলটি ডায়মন্ড চত্বরের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে পুলিশ ব্যারিকেড সৃষ্টি করে মিছিলটি থামিয়ে দেয়। মিছিল পূর্ব-সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপি’র সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান, বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন খান, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, এটিএম কামাল, জামাল উদ্দিন কালু, আলী হোসেন প্রধান, সুরুজ্জামান, হাজী শাহীন, হাসান আহম্মেদ, আবুল সরদার, মোহাম্মদ হোসেন কাজল, মোশারফ হোসেন, আনোয়ার  দেওয়ান, শাহজাহান খন্দকার, অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া ভাসানী, নুরুল হক  চৌধুরী দিপু, আক্তার হোসেন খোকন শাহ্‌ প্রমুখ।
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে জানান, কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি’র উদ্যোগে শুক্রবার সকালে ঘাষপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে স্বাধীনতার স্মৃতিফলক চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে জেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি উমর ফারুক, জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক হাসিবুর রহমান হাসিব, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোর্শেদ হোসেন লিটু, এনামুল হক এনা, ছাত্রদল নেতা মমিনুল ইসলাম রানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা আহ্বায়ক শাহনুর আশরাফ জুয়েল, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হানিফ বিপ্লব, আল হামিদুজ্জামান হামিদ, আজিজুল হক, যুবনেতা মাসুদ রানা বাবু, তাঁতী দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রমুখ।
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গতকাল সকাল থেকে বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসার  শত শত নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে জেলা বিএনপি’র প্রধান কার্যালয়ে জড়ো হন। এরপর দুপুরে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয় বিক্ষোভ সমাবেশ। জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক তোজা, সাটুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা বশির উদ্দিন আহম্মেদ ঠাণ্ডু ও যুবদল নেতা মাকসুদুর রহমান মুকুল প্রমুখ।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, বিকালে জেলা বিএনপি’র দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি নেতা ছাইদুল ইসলাম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মো. সাহাবউদ্দিন সাবু, জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হারুনুর রশিদ ব্যাপারী ও নিজাম উদ্দিন ভূইঁয়া, জেলা যুবদলের সভাপতি রেজাউল করিম লিটন, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাহীন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হারুনুর রশিদ, পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন, কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা লোকমান হোসেন প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন জেলা, উপজেলা ও পৌর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি’র আয়োজনে বিক্ষোভ, মিছিল হয়েছে। শুক্রবার সকালে শহরের শের-ই-বাংলা সড়ক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পৌর বিএনপি’র সভাপতি জাহিদুজ্জামান মনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, হরিণাকুণ্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ মজিদ, উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি কামাল আজাদ পান্নু, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম, বিএনপি নেতা আবদুল মজিদ, আশরাফুল ইসলাম, জিয়াউল ইসলাম ফিরোজ, সাজ্জাদুর রহমান তনু, আব বক্কর, আহসান হাবীব রনক, মিজানুর রহমান সুজন, মীর ফজলে এলাহী শিমুল, আরিফুল ইসলাম আনন। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে মুক্তির দাবি জানান।
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে জানান, খুলনা মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা হত্যাকারী শেখ হাসিনা সরকারকে আর সময় দেয়া যাবে না। এখন প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় এসেছে। শুক্রবার বিকাল ৩টায় কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি’র প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগরী বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, সৈয়দা নার্গিস আলী, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশারফ হোসেন, জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, আবদুল জলিল খান কালাম, সিরাজুল ইসলাম, ফখরুল আলম, এডভোকেট ফজলে হালিম লিটন, রেহেনা ঈসা, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, আরিফুজ্জামান অপু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, সিরাজুল হক নান্নু, এসএম আরিফুর রহমান মিঠু, শফিকুর আলম তুহিন, মেহেদী হাসান দিপু, আজিজুল হাসান দুলু প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে জানান, বরিশালে বিএনপি’র মিছিলে পুলিশের বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ৩ টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। এসময় বিএনপি’র ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার দুপুরে বরিশাল নগরীর বিবির পুকুর পাড় এলাকায় এ ভাঙচুর ও  গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটে। দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল  সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হলে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপি। দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সভাপতি এবায়েদুল হক চানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তৃতা উত্তর জেলা বিএনপি’র সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি আবুল হোসেন খান, দক্ষিণ জেলা বিএনপি সম্পাদক আবুল কালাম শাহিন, বিএনপি নেতা মনিরুল হাসান মনির, মনিরুজ্জামান ফারুক প্রমুখ। সমাবেশ শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় বিএনপি নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একপি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি টাউন হল চত্বর অতিক্রমের চেষ্ঠা করলে পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। পরে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ ঝটিকা মিছিল আকারে নগরীর বিবির পুকুর পাড়  পৌঁছে ২টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এবং ২টি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ মিছিলকারীদের ধাওয়া করে ৫ বিএনপি কর্মীকে আটক করে।
স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, শুক্রবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর ভুবনমোহন পার্ক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর মালোপাড়া, সাহেববাজার, মনিচত্বর, জিরোপয়েন্ট হয়ে পুনরায় ভুবনমোহন পার্কে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শফিকুল হক মিলনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, জামালপুর থেকে জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় জামালপুর জেলা বিএনপিসহ সকল অঙ্গ সংগঠন শহরে মিছিল ও সমাবেশ করেছে। স্থানীয় জাহেদা শফির মহিলা কলেজ গেইট চত্বরে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জামালপুর জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট শাহ্‌ মো: ওয়ারেছ আলী মামুন। এ ছাড়া জেলা বিএনপি’র ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আছানুজ্জামান রুমেল, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম খান সজীব বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ শেষে পুলিশি প্রহরায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বকুলতলায় গিয়ে শেষ হয়।
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, কলাপাড়া উপজেলা বিএনপি’র উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে পুলিশি বাঁধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ মিছিল করতে পারলেও লাঠিচার্জের কারণে পথসভাটি পুরোপুরি পণ্ড হয়ে গেছে। সকাল দশটায় উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হাজী হুমায়ুন সিকদারের নেতৃত্বে বের করা হয় বিক্ষোভ মিছিল। নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কাপুড়িয়া পট্টি অতিক্রম করার চেষ্টা করলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। একপর্যায়ে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মিছিলটি এগিয়ে যেতে থাকে এবং শহরের মনোহরী পট্টি এলাকা অতিক্রম করে দলের নতুনবাজার এলাকার দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে পথসভা শুরু করে। পথসভায় উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার নাসির উদ্দিন প্রথমে বক্তব্য রাখেন। এরপর কলাপাড়া পৌর বিএনপি’র সভাপতি উপাধ্যক্ষ নূর বাহাদুর সমাপনী বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। ঠিক এ সময় কামারপট্টি মোড়ে অবস্থান করা ১০-১২ জন পুলিশ দৌড়ে গিয়ে লাঠিচার্জ শুরু করলে পথসভাটি পণ্ড হয়ে যায় এবং উপস্থিত নেতা-কর্মীরা দৌড়ে দলীয় কার্যালয়ের ভিতর ঢুকে পড়ে। পুলিশও তখন নেতা-কর্মীদের পিছনে পিছনে দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে প্রবেশ করে লাঠিপেটা করতে থাকে। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে কলাপাড়া পৌর বিএনপি’র সভাপতি উপাধ্যক্ষ নূর বাহাদুর, উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হাজী হুমায়ুন সিকদার, যুবদল কর্মী সামুয়েল হক তানিমসহ ১০-১২ জন নেতাকর্মী আহত হন। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার আধাঘণ্টা পরে পুলিশ আবারও উৎসাহী হয়ে নতুন বাজার এলাকার অলি-গলিতে অবস্থান করা নেতা-কর্মীদের ওপর দ্বিতীয় দফা লাঠিচার্জ করে।

No comments

Powered by Blogger.