মীর কাসেম আলীর গ্রামে জামায়াতের গোপন বৈঠক

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর এলাকা মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে গোপন বৈঠক করছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। উপজেলার আন্ধারমানিক এলাকায় জামায়াত পরিচালিত ইসলামিক ট্রাস্ট ভবনে এসব গোপন বৈঠক বসে। এতে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র ও নাশকতামূলক ঘটনা সৃষ্টির পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে নানা শংকা প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি গত সপ্তাহে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও জানিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামিক ট্রাস্ট ভবনে অনুষ্ঠিত একাধিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের জেলা আমীর মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন, ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মীর নাসির আলী, সেক্রেটারি এসএম রইস উদ্দিন, ট্রাস্টের পরিচালক (প্রকল্প) মাওলানা হাতেম আলী, ডা. আলী আহমদ, হরিরামপুর থানা জামায়াতের আমীর মাওলানা আফজাল হোসাইন এবং হরিরামপুর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবুল হাশেম মোল্লাসহ স্থানীয় নেতারা। মীর কাসেম আলীর বাবার বাড়ি হরিরামপুরের সুতালড়ি এলাকায়। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১৯৭৯ সালে আন্ধারমানিক এলাকায় ২৮০ শতক জমির ওপর ইসলামিক ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে শুরু থেকে মীর কাসেম আলী ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন মীর নাসির আলী। ২০১০ সালে ট্রাস্টটি জয়েন্ট স্টকে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত ট্রাস্টটি নিবন্ধন পায়নি।
এ ট্রাস্টের অধীনে ২৮টি আদর্শ মক্তব ও মাদ্রাসা রয়েছে, যেখানে মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৭৫০ জন। ট্রাস্টের অধীনে একটি দাতব্য চিকিৎসালয়ও রয়েছে। যেখানে ১০ টাকা ফি নিয়ে হোমিও চিকিৎসা দেয়া হয়। ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন থেকে প্রতি বছর দাতব্য চিকিৎসা খাতে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং মক্তব বা মাদ্রাসার জন্য ৪ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়।
দুই পৃষ্ঠার গোয়েন্দা প্রতিবেদনে মন্তব্যের কলামে বলা হয়, ইসলামিক ট্রাস্টটি হরিরামপুর থানার কাছে হওয়া সত্ত্বেও স্থানীয় পুলিশ এর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত নয়, যা মোটেই কাম্য নয়। প্রতিবেদনে তিন দফা সুপারিশে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য যুগান্তরের স্থানীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ট্রাস্টের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে হরিরামপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল বাশার সবুজ জানান, স্থানীয় জামায়াত নেতা হাতেম আলীকে পুলিশ সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে। এরপর থেকে ইসলামিক ট্রাস্ট ভবনে গোপন বৈঠক বন্ধ হয়ে গেছে। বাকিরা আত্মগোপনে রয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.