‘নিশা দুই আনার মন্ত্রী’ -সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম

বাংলাদেশে সফররত যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালকে ‘দুই আনার মন্ত্রী’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। শনিবার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে নিশা দেশাইয়ের বৈঠকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আশরাফ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুই আনা, চার আনাও না- এক মন্ত্রী আছে নিশা দেশাই। তার এখনও বিয়ে হয় নাই। তার সঙ্গে দুই দুইবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে টেলিভিশনে দেখে মনে হচ্ছে ২২/২৩ বছরের মেয়ের সামনে একদম শিশু খালেদা। হাত পেতে বসে আছেন ক্ষমতাটা যাতে এই মিস দেশাই বেগম খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দেবেন। এই সাক্ষাৎ দেশের জন্য লজ্জাজনক ঘটনা। ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনাকে ব্যঙ্গ করে  আশরাফ বলেন, আমার বাড়িতে একটি কাজের মেয়ে আছে তার নাম মর্জিনা। রাত্রে বাসায় গেলে সে বলে মামা টিভিতে বার বার আমার নাম বলে কেন? তখন ওকে আমি বলি- ও হলো মার্কিন রাষ্ট্রদূত মর্জিনা। ও চাচ্ছে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে নামাতে। এ কথা শুনে কাজের মেয়েটি তার নাম পরিবর্তন করেছে। সৈয়দ আশরাফ বলেন, এমন কোনো শক্তি নেই যে এক সেকেন্ড আগেও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারবে। বিএনপি বলেছিল- ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি হলে তাদের পক্ষে থাকবেন। কিন্তু মনমোহন সিংহের চেয়েও মোদি আওয়ামী লীগের পক্ষে কট্টর অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থান এমন নেই যে বহিঃবিশ্বের কোন শক্তি এসে ক্ষমতা পরিবর্তন করতে পারে। সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধার নামে পাকিস্তানের এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন। তিনি তারেক জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, সে বাপের মতো বেয়াদব হয়েছে। পৃথিবীর কোথাও স্বাধীনতা যুদ্ধের পরাজিত শক্তি রাজনীতি করতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশে জিয়া-এরশাদ যুদ্ধাপরাধিদের পুনর্বাসন করেছে। আওয়ামী লীগ যতদিন থাকবে ততদিন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে। তিনি বলেন, একশ’ বছরেও এদেশে কেয়ারটেকার সরকার হবে না। বিএনপির অবস্থা হবে মুসলিম লীগের মতো। রাষ্ট্রক্ষমতা তো দূরের কথা নিজ দলের প্রধানও থাকতে পারবে না খালেদা জিয়া। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করার নামে খালেদা জিয়া দেশব্যাপী যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তাকেও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপি’র পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম হানিফ এমপি, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি, এসএম কামাল হোসেন, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা এমপি। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন খুলনার অফিসার্স ক্লাবে হওয়ার কথা থাকলেও সমাবেশস্থলেই শেখ ফজলুল করিম সেলিম তালুকদার আব্দুল খালেক এমপিকে সভাপতি ও মিজানুর রহমান মিজান এমপিকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ঘোষণা করেন।

No comments

Powered by Blogger.