তবুও তারা দুশ্চিন্তায় by শাহেদ চৌধুরী

দুশ্চিন্তায় আছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন ডাকসাইটে নেতা। বিরোধী দল নির্বাচনে নেই, তবুও নেতারা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হচ্ছেন আজ। দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন। এ অবস্থায় তারা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে থেকে নির্বাচনী বৈতরণী পেরোনোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। কেউ কেউ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নির্বাচনী জনসভা করে বিরূপ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এর পরও তাদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কমছে না। মতিয়ার অস্বস্তি : বর্তমান সরকারের একজন জনপ্রিয় ও যোগ্য মন্ত্রী হিসেবে এককালের 'অগি্নকন্যা' কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তার সততা ও স্বচ্ছতাও যেন তার বৈরী। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও এ আসনের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে। দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন নালিতাবাড়ী উপজেলার পদত্যাগী চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বাদশা। তিনি কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা। তার প্রার্থিতায় অস্বস্তিতে পড়েছেন মতিয়া চৌধুরী।
নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলা নিয়ে এ আসনে নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ছাড়া শীর্ষ নেতাদের অন্যরা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীর পক্ষে রয়েছেন। তবে স্থানীয় নেতাকর্মীদের একটি অংশ বদিউজ্জামান বাদশার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন। ব্যক্তিগত রেষারেষির জের ধরে বাদশা নির্বাচনে লড়ছেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। কেউ কেউ এ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিলেও শেষতক মতিয়া চৌধুরী স্বস্তিতেই নির্বাচনী বৈতরণী পেরোবেন বলে অনেকে মনে করছেন।
দুশ্চিন্তায় টুকু : দুশ্চিন্তায় পড়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু। তার ঘাম ঝরিয়ে ছাড়ছেন পাবনা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। তিনি সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী এবং এমপি। আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা। ওয়ান-ইলেভেনের সময় গায়ে সংস্কারপন্থির তকমা লাগায় দল থেকে বাদ পড়েছেন। গত নির্বাচনে দলের মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার পর থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন।
এক সময়ে অধ্যাপক আবু সাইয়িদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতি করলেও এখন শামসুল হক টুকু জেলা রাজনীতির শীর্ষ নেতা। তাই নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে তার পক্ষে একাট্টা হয়ে আছেন। কিন্তু আত্মীয়-স্বজনের দুর্নামচিত্র স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে নির্বাচনে রীতিমতো কাবু করে ফেলেছে। তিনি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়েছেন। অন্যদিকে লোকমুখে রয়েছে আবু সাইয়িদের প্রচার।
নাকাল ফকির : ময়মনসিংহ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. মজিবুর রহমান ফকির নাকাল হয়ে আছেন। তাকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে আছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজনীন আলম। এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে।
নাজনীন আলমের স্বামী ফেরদৌস আলম স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। এ ছাড়াও গৌরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বিধু ভূষণ দাস এবং স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আহমেদ সেলভীর সমর্থন নাজনীন আলমের পক্ষে। ফলে বিপাকে পড়েছেন সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।
মন্নুজানের দুশ্চিন্তা : আত্মীয়-স্বজনের অপকর্মের খেসারত দিচ্ছেন খুলনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে টেন্ডার ও নিয়োগবাণিজ্যসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে ইমেজ সংকটে পড়েছেন মন্নুজান সুফিয়ান। তার দুশ্চিন্তা কাটছে না।
নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান খান খোকন। বেশ শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন এই স্বতন্ত্র প্রার্থী। মনিরুজ্জামান খান খোকন দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ কারণেও তিনি সাধারণ মানুষের সহানুভূতি পাচ্ছেন। সংখ্যায় কম হলেও আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী তার জন্য গোপনে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন।
জালাল-সেলিমের লড়াই :পুরান ঢাকায় নির্বাচন জমে উঠেছে। বিশেষ করে ঢাকা-৭ আসনের ভোটচিত্র অন্য রকমের। এ আসনের বর্তমান এবং সাবেক এমপি একে অন্যের প্রতিপক্ষ হয়েছেন। দু'জনই আওয়ামী লীগের। এর মধ্যে বর্তমান এমপি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন দলের মনোনয়ন পেয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাবেক এমপি হাজি মোহাম্মদ সেলিম। এ আসনে তীব্র লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। যার কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজি সেলিমকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে ছিলেন ডা. জালাল। কিন্তু সে দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে গোপনে গোপনে বিএনপির সমর্থকরা হাজি সেলিমের পক্ষে কাজ করছেন।
ম্লান কামাল :আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদার ঢাকা-১৫ আসনের বর্তমান এমপি। এলাকায় বেশ প্রভাব তার। কিন্তু নির্বাচনে সেটা অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। তার প্রতিপক্ষ হয়েছেন ঢাকা-১৬ আসনের এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহর ভাই এখলাস উদ্দিন মোল্লাহ। কয়েক বছর আগে আওয়ামী লীগে যোগ দিলেও পদ-পদবি নেই তার। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে আবদার করে এখলাস উদ্দিন মোল্লাহর বহিষ্কার চেয়েছেন কামাল আহমেদ মজুমদার। এই আবদারে সাড়া মেলেনি। নির্বাচনী এলাকায় এসে শেখ হাসিনা জনসভায় ভাষণ দেওয়ায় কিছুটা এগিয়ে গেছেন কামাল মজুমদার। তবুও তিনি এখনও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
যাদের বেহাল দশা : ঢাকা-১৬ আসনের বর্তমান এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী সর্দার মোহাম্মদ মান্নানের (এসএম মান্নান কচি) সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। কচি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি। ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহর প্রতিপক্ষ হয়েছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই স্বতন্ত্র প্রার্থীর ফুফু।
সুনামগঞ্জ-৩ আসনেও একই অবস্থা। বর্তমান এমপি এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিপক্ষ হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ আজাদ। এই আসনেও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। যশোর-৪ আসনে বর্তমান এমপি রণজিৎ কুমার রায়ের সঙ্গে লড়ছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী যশোর_৬ আসনের বর্তমান এমপি শেখ আবদুল ওহাব। এ আসনে লড়াই হবে সমানে সমান।
কুমিল্লা-১ আসনে বর্তমান এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়াকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা হাসান জামিলের ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাঈম হাসান। কুমিল্লা-৬ আসনে আ ক ম বাহাউদ্দিনের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আফজাল খান অ্যাডভোকেটের ছেলে মাসুদ পারভেজ খান। নির্বাচনে তার সঙ্গেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। নোয়াখালী-৬ আসনে আয়েশা ফেরদাউসের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমীরুল ইসলাম চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন।
গাইবান্ধা-২ আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান এমপি মাহবুব আরা বেগম গিনির সামনে চ্যালেঞ্জ হয়ে আছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী মকদুবর রহমান সরকার। গাইবান্ধা-৪ আসনের বর্তমান এমপি মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে সমানভাবে লড়ছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে গোলাম মোস্তফা বিশ্বাসের সঙ্গে সমানভাবে লড়ছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী খুরশিদ আলম। নওগাঁ-৩ আসনে আকরাম হোসেন চৌধুরীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন ছলিম উদ্দিন তরফদার।
নওগাঁ-৫ আসনে আবদুল মালেকের সঙ্গে সমান গতিতে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম রফিক। রাজশাহী-৩ আসনে আয়েন উদ্দিনের সঙ্গে লড়ছেন বর্তমান এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। রাজশাহী-৬ আসনে বর্তমান এমপি শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক রায়হান। তিনি সাবেক এমপি।
পাবনা-২ আসনেও একই অবস্থা। এ আসনের বর্তমান এমপি মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আবুল কালাম আজাদ। মেহেরপুর-১ আসনে ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলের ইয়ারুল ইসলাম। এ দুই প্রার্থীর মধ্যেই নির্বাচনী লড়াই হবে। মেহেরপুর-২ আসনের প্রার্থী এমএ খালেকের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মকবুল হোসেন। এ আসনেও লড়াই হবে।
কুষ্টিয়া-১ আসনের বর্তমান এমপি আফাজ উদ্দিন আহমেদের অবস্থান কিছুটা নড়বড়ে। এগিয়ে আছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল হক চৌধুরী। কুষ্টিয়া-৪ আসনে দলীয় প্রার্থী আবদুর রউফের সঙ্গে সমান গতিতে লড়ছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী সদর উদ্দিন খান। ঝিনাইদহ-১ আসনে বর্তমান এমপি আবদুল হাই স্বতন্ত্র প্রার্থী দলের নায়েব আলী জোয়ারদারের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হচ্ছেন।
ঝিনাইদহ-২ আসনে বর্তমান এমপি সফিকুল ইসলামের সঙ্গে লড়ছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী। এ আসনেও তীব্র লড়াইয়ের মুখোমুখি হচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী। ঝিনাইদহ-৩ আসনের বর্তমান এমপি শফিকুল আজম খান দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নবী নেওয়াজ বেশ ঝুঁকিতে পড়েছেন।
যশোর-২ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জুতসই অবস্থানে রয়েছেন। তার সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না আওয়ামী লীগের মনিরুল ইসলাম। যশোর-৫ আসনে বর্তমান এমপি খান টিপু সুলতানের সঙ্গে সমান গতিতে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বপন ভট্টাচার্য। মাগুরা-১ আসনে বর্তমান এমপি ডা. সিরাজুল আকবরের শক্ত প্রতিপক্ষ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী কুতুবুল্লাহ হোসেন মিয়া।
মাগুরা-২ আসনেও একই অবস্থা। এ আসনে বর্তমান এমপি বীরেন শিকদারের প্রতিপক্ষ হয়েছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নান। খুলনা-১ আসনের বর্তমান এমপি ননী গোপাল মণ্ডল দলের মনোনয়ন পাননি। তিনি দলীয় প্রার্থী সাবেক এমপি পঞ্চানন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ আসনেও লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
সাতক্ষীরা-২ আসনে মীর মোস্তাক আহমেদ রবির বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলের ছাইফুল করিম সাবু। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বেশ নাজুক অবস্থানে রয়েছেন। বরগুনা-১ আসনে বর্তমান এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলের দেলোয়ার হোসেন। বরগুনা-২ আসনে শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দলের আবুল হোসেন শিকদার।
নেত্রকোনা-১ আসনের বর্তমান এমপি মোশতাক আহমেদ রুহী দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছবি বিশ্বাস খুব একটা সুবিধা করতে পারছেন না। নেত্রকোনা-২ আসনের প্রার্থী আরিফ খান জয়কে চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের আবদুন নূর খান। মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান এমপি সাগুফতা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে লড়ছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন আহমদ।
নরসিংদী-৩ আসনেও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলেছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন। তার একমাত্র প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম মোল্লা। নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বর্তমান এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রতিপক্ষ হয়েছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শওকত আলী। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর।
সিলেট-৪ আসনের বর্তমান এমপি ইমরান আহমদের বিরুদ্ধে লড়ছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক আহমদ। সুনামগঞ্জ-১ আসনের বর্তমান এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ রফিকুল হক। তাদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। হবিগঞ্জ-৪ আসনে মাহবুব আলীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সৈয়দ তানভীর আহমেদ। বান্দরবানে বীর বাহাদুর উ শৈ সিংয়ের প্রতিপক্ষ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা।
নড়াইল-২ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ হাফিজুর রহমানকে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ তা মেনে নেয়নি। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সোহরাব হোসেন বিশ্বাস। তিনি বেশ এগিয়ে রয়েছেন। সাতক্ষীরা-১ আসনেও একই ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাহর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের এস এম মুজিবর রহমান। তিনি বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলছেন।
ময়মনসিংহ-৭ আসনে জাতীয় পার্টির এম এ হান্নানকে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের। কিন্তু সেটা মানেননি স্থানীয় নেতা হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন। কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে বর্তমান এমপি ও সর্বদলীয় সরকারের প্রতিমন্ত্রী জাতীয় পার্টির মুজিবুল হককে কেন্দ্রীয়ভাবে ছাড় দেওয়া হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের ড. মিজানুল হক। এই আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
কুমিল্লা-৩ আসনে জাতীয় পার্টির আকতার হোসেনকে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও তাকে চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের আহসানুল আলম কিশোর ও ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন। এর মধ্যে ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবেন বলে অনেকে মনে করছেন। কুমিল্লা-৪ আসনেও একই অবস্থা। জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন রাজুকে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের রোশন আলী ও রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীই নির্বাচনের মূল প্রতিপক্ষ।
ফেনী-৩ আসনে জাতীয় পার্টির আনোয়ারুল কবির রিন্টু আনোয়ার ছাড় পেলেও তা মানেননি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী রহিম উল্লাহ। চট্টগ্রাম-২ আসনে তরীকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীকে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত মানেনি আওয়ামী লীগ। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ড. মাহমুদ হাসান। ঢাকা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেনকে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের ড. আওলাদ হোসেন।

No comments

Powered by Blogger.