জিএসপি পুনর্বহালে যুক্তরাষ্ট্রকে বিএনপির মৌখিক অনুরোধ

বাংলাদেশের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) বহাল রাখতে যুক্তরাষ্ট্রকে মৌখিকভাবে অনুরোধ করেছে বিএনপি। গত সোমবার রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশে নিযুক্ত
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার বাসভবনে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই অনুরোধ জানান।
বিএনপির কয়েকজন নীতিনির্ধারক জানিয়েছেন, শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রকে দলের চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানানোরও প্রক্রিয়া চলছে। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলও প্রথম আলোকে বলেছেন, তাঁরা জিএসপি পুনর্বহালে যুক্তরাষ্ট্রকে চিঠি দেবেন।
মৌখিক অনুরোধে রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়েছে, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি স্থগিতের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অত্যন্ত কঠোর। এই সিদ্ধান্ত প্রকৃতপক্ষে শ্রমিকদেরই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এ সময় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন মির্জা ফখরুল। সাম্প্রতিক সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচন, সংসদে বিরোধী দলের কর্মকাণ্ডসহ কয়েকটি বিষয়ে সেখানে আলোচনা হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জিএসপি সুবিধা স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য সংসদে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছেন। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবও রাষ্ট্রদূতের বাসায় গিয়ে অনুরোধ জানিয়ে এসেছেন। দেশের ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে জিএসপি সুবিধা দরকার। বিএনপি সেটা অনুবাধন করে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে বিএনপির যদি আরও কিছু করার থাকে তাও তাঁরা করবে।
গত ২৭ জুন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রায় পাঁচ হাজার ধরনের পণ্যের শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করে। শ্রমমানের যথাযথ উন্নয়ন না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত আগামী সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
বিএনপির গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবারই চিঠি দেওয়ার কথা ছিল। তবে পরে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব বুঝে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জিএসপি পুনর্বহালে বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রকে এমন সময় অনুরোধ জানাল, যখন ওয়াশিংটন টাইমস -এ বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার লেখা একটি নিবন্ধ নিয়ে দেশে সমালোচনা চলছে। যদিও লেখাটি ছাপা হওয়ার প্রায় পাঁচ মাস পর গত ২৯ জুন সংসদে খালেদা জিয়া বলেছেন, ওই লেখাটি তাঁর নয়। এ ধরনের কোনো লেখা তিনি পাঠাননি।
খালেদা জিয়ার নামে ছাপা হওয়া ওই নিবন্ধে বর্তমান সরকারের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ ও এ দেশের অন্যান্য কর্মকাণ্ডের ওপর অবরোধ আরোপের জন্যও পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। লেখাটিতে র‌্যাবের হত্যা, গুম ও পোশাকশিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ, ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অপসারণ ও বিরোধী দলের প্রতি দমন-পীড়নের কথা তুলে ধরা হয়। নিবন্ধটি ছাপা হওয়ার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল লেখার যৌক্তিকতা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। লেখাটি যে খালেদা জিয়ার নয় সে ব্যাপারে দল থেকে কোনো বক্তব্য বা ওই পত্রিকায় কোনো প্রতিবাদ দেওয়া হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.