‘সবজি ভরা বাজার, তবুও দাম চড়া’ by ইমরান আলী

সোমবার দিনগত রাত আড়াইটা। কাওরান বাজারের গলিতে কাঁচা মরিচ মেপে দিতে ব্যস্ত আলামিন। আলামিনের ব্যস্ততার মাঝেই কথা হয় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে। আলামিন জানায়, “গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীতে সবজি পণ্যের ব্যাপক আমদানি। বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে জলাবদ্ধতার কারণে ক্ষেত নষ্ট হওয়া, ভালো দাম হওয়ায় কৃষকরা তাদের পণ্য বাজারে নিয়ে আসাতেই আমদানী বেশি।”
আলামিন জানালেন, “ কাঁচা মরিচের প্রচুর আমদানি হলেও দাম কিন্তু কমেনি। বরং দাম দিন দিন বাড়তির দিকেই রয়েছে। গত কয়েকদিন আগে ৩০০ টাকা মন থাকলেও এখন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মন ধরে বিক্রি হচ্ছে।”

আর দাম বৃদ্ধির তালিকায় যে শুধুমাত্র কাঁচা মরিচ রয়েছে তা কিন্তু নয়। পুরো কারওয়ান বাজারে প্রত্যেকটি সবজির দামই চড়া। প্রত্যেকটি সবজির প্রচুর আমদানি থাকলেও বাজারে এর কোন প্রভাব নেই। বরং মোকাম থেকেই পাইকাররা বেশি দামে কিনে আনছেন। যার কারণে বেশি দামে বিক্রি করা ছাড়া তাদের আর কোন উপায় থাকছে না।

আলামিন জানালেন, “ কারওয়ান বাজারে কাঁচা মরিচ সাধারণত কয়েকটি জেলা থেকে আসে। এর মধ্যে বগুড়া, মানিকগঞ্জ এবং রংপুর অন্যতম।”

আলামিনের মত বেগুন ও বরবটির পাইকার দেলোয়ারের সঙ্গে কথা হয়। বগুড়া সদরের বাসিন্দা দেলোয়ার কারওয়ান বাজারে পাঁচ বছরের অধিক সময় ধরেই এই কাঁচা বাজারে ব্যবসা করেন।

দেলোয়ার জানালেন, “গত সপ্তাহেই বরবটির দাম একেবারেই কম ছিল। কিন্তু এখন বাড়তির দিকে। বর্তমানে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৪ টাকা কেজি দরে।”

তিনি বলেন, “ বাজার ঘুরে দেখেন, আমদানি কিন্তু কম নয়। তারপরও যে বাজার তাতে করে পাইকার ও কৃষক উভয়েই খুশি।”

একই অবস্থা পটলেও। আব্দুর রশিদ পটলের পাইকার।সবজি কিনছেন আর বিক্রি করছেন এ নিয়েই শত ব্যস্ততা তার।

রশিদ জানালেন, “পূর্বে পটল ৮/১০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ১৮/২২ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।”

পুরো কারওয়ান বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে সবজির ব্যাপক আমদানি। অনেক সময় আমদানি কম থাকলে দামের উঠানামা হয়। কিন্তু বর্তমানে সবজির প্রচুর আমদানি থাকলেও এর কোন প্রভাব নেই বাজারে। প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়তির দিকে।

আলু, পটল, কাকরল, লাউ, কচুর লতি, মিষ্টি কুমড়া, করলা, কাঁচা মরিচ, শসা, শাকসহ সব ধরনের সবজির দাম এখন চড়া। বেগুন প্রকারভেদে ২৮/৩২/৪০ টাকা, করলা/পটল ১৬-১৮ টাকা, বরবটি ৩২-৩৪টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহেও বর্তমান দরের চেয়ে কমে বিক্রি হতো।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির কারণে কৃষকরা দ্রুত এগুলো উঠিয়ে বাজারে ছাড়ছেন। এছাড়া এখন বেশি দাম পাওয়া যাবে এমনটিও তারা মনে করছেন।

No comments

Powered by Blogger.