সরকারের প্রতি ফখরুল-জাহাঙ্গীরের অবস্থান জানতে চাই

যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম কোথায় তা জানতে চেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, 'জাহাঙ্গীর আলম শুনেছি জনপ্রিয় ব্যক্তি। তিনি গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।
কয়েক দিন আগে তাঁকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের লোকজন জোর করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে গেছে। নির্বাচন না করার ঘোষণা দিতে তাঁকে বাধ্য করা হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পর এভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নিয়ম না থাকলেও এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনরা তাই করেছে।' তিনি বলেন, 'পত্রিকায় খবর এসেছে জাহাঙ্গীরের পরিবার তাঁকে খুঁজে পাচ্ছে না। তাহলে জাহাঙ্গীর কি ইলিয়াস আলীর মতো গুম হয়ে গেছেন? আমরা তাঁর অবস্থান সরকারের কাছে জানতে চাই।'
গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত এক সমাবেশে ফখরুল এ কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, 'নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে পরীক্ষা করে দেখুন, কে জনপ্রিয়। আপনারা তা দেবেন না। সম্প্রতি চারটি সিটি নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। পরশু একটি ছোট পৌরসভা কালীগঞ্জেও ভরাডুবি হয়েছে। সবখানেই আপনাদের পরাজয় ঘটবে। কারণ জনগণ আপনাদের ওপর থেকে আস্থা তুলে নিয়েছে।' তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, হবেও না। আমরা বিশ্বাস করি, নির্দলীয় সরকারের অধীনেই কেবল অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে। সেই নির্বাচনে জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটবে। প্রধানমন্ত্রীকে বলব, প্রতারণা ও ছলচাতুরী না করে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন।' তিনি বলেন, '১৯৭৩ সালে দেখেছি, হেলিকপ্টারে করে কিভাবে ব্যালট বাক্স ঢাকায় এনে ফলাফল পাল্টে খোন্দকার মুশতাক আহমেদকে জিতানো হয়েছিল।'
মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান জাতীয়তাবাদী শক্তি, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা রক্ষায় ভবিষ্যতের ধারক। তিনি গণতন্ত্রের পথে পাহাড়ের মতো অবস্থান নেবেন। আজ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা প্রমাণ করতে পারেনি সরকার। এ জন্য তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে অপপ্রচার শুরু করেছে।
জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, রুহুল কবীর রিজভী, অধ্যাপক পিয়াস করীম, ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, আবুল হোসেন, সেলিম ভুঁইয়া, শ্যামা ওবায়েদ, ব্যারিস্টার মারুফ হোসেন প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই মামলা হবে : এদিকে গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাকক্ষে সাংবিধানিক অধিকার ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, 'আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলে দুই নেত্রীকেই জেলে যেতে হবে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি। গত সাড়ে চার বছরের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের জন্য বিরোধীদলীয় নেতা নন, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই মামলা হবে। এর দায় থেকে তিনি মুক্ত হতে পারবেন না।'
সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোরশেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন খন্দকার গোলাম মূর্তজা, আবদুস সালাম, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, সুরঞ্জন ঘোষ প্রমুখ।
৮ জুলাই মুন্সীগঞ্জে জনসভা : তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে আগামী ৮ জুলাই মুন্সীগঞ্জে জনসভা করবে বিএনপি। গতকাল সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপি নেতাদের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, মিজানুর রহমান সিনহা, আব্দুল হাই, রিপন মল্লিক ও সরাফত আলী সপু উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সরাফত আলী সপু কালের কণ্ঠকে এ তথ্য জানান।

No comments

Powered by Blogger.