রাজনৈতিক অধিকার হারাচ্ছেন আফগান নারীরা

আফগানিস্তানে গোপনে নারীদের রাজনৈতিক অধিকার হ্রাস করা হয়েছে। প্রাদেশিক পরিষদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখার যে নিয়ম ছিল, গত মাসের শেষের দিকে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এটা হয়েছে রক্ষণশীল এমপিদের উদ্যোগে।
রাজনীতিবিদরা অভিযোগ করেছেন, জঙ্গি সংগঠন তালেবানকে শান্তি আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশ্যেই প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সরকার নারীর অধিকার লঙ্ঘন করছে।
২০০১ সালে তালেবান সরকারের পতনের পর আফগান নারীরা প্রথম রাজনীতিতে প্রবেশের সুযোগ পান। তাঁদের এ সুযোগ করে দিতে প্রায় ৪০০ জেলা পরিষদ ও ৩৪টি প্রাদেশিক পরিষদের সব কয়টিতে এক-চতুর্থাংশ নারী আসন সংরক্ষিত রাখার নিয়ম চালু হয়। গত মাসে এই নিয়ম বাতিল করা হয়েছে। নারী এমপিদের অগোচরে আফগান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ওলেসি জিরগায় গত ২২ মে এ-সংক্রান্ত একটি বিল পাস হয়। কয়েক দিন আগে নারী এমপিরা এই তথ্য জানতে পারেন। বিলটি এখনো উচ্চ কক্ষে পাস হওয়া বাকি আছে। আইনে পরিণত হওয়ার আগে প্রেসিডেন্টের অনুমোদনেরও দরকার হবে। লিঙ্গ পরিচয়ের ভিত্তিতে সংরক্ষিত আসন রাখার বিধান সংবিধান পরিপন্থী হবে বলে যুক্তি দিয়েছেন পার্লামেন্টের রক্ষণশীল সদস্যরা।
আফগান পার্লামেন্টের ১০২ সদস্যের উচ্চ কক্ষে এখন নারীদের জন্য ২৮টি আসন সংরক্ষিত আছে। প্রেসিডেন্ট কারজাই ১৭ জন নারীকে সরাসরি নিয়োগ দিয়েছেন। তবে বাকি ১১টি আসনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ প্রাদেশিক পরিষদের সংরক্ষিত আসনের নারীরা এই আসনগুলোর জন্য মনোনয়ন দেওয়ার অধিকার রাখতেন।
আফগানিস্তানের নারী অধিকারের আন্দোলন কর্মী ও এমপি ফারখুন্দা নাদেরি বলেন, 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই সংরক্ষিত আসন বাতিলের এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তালেবানকে শান্তি আলোচনায় ফিরিয়ে আনার জন্য সন্তুষ্ট করতে নারীর অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।' আমাদের না জানিয়েই সংরক্ষিত আসন বাতিল করা হয়েছে।'
আফগানিস্তানের নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র নূর মোহাম্মদ নূর বলেন, 'এ দেশে জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে নারীদের পার্লামেন্টে যাওয়ার মতো পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। সংশোধিত আইনের কারণে তাঁরা নিজেদের অধিকার হারাবেন।' সূত্র : গালফনিউজ।

No comments

Powered by Blogger.