সিরিয়ার সীমান্তসংলগ্ন জর্ডানে সেনা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

সিরিয়ার সীমান্তসংলগ্ন জর্ডানে অন্তত ৭০০ সেনাসদস্য পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গত শুক্রবার এ কথা জানান। তিনি দাবি করেছেন, জর্ডান সরকারের অনুরোধেই ওয়াশিংটন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জর্ডানে সেনা পাঠানোর ব্যাপারে ওবামা বলেন, সিরিয়ায় চলমান সহিংসতার আঁচ জর্ডানে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করে দেশটি সেখানে মার্কিন সেনা পাঠানোর অনুরোধ করে। আর ওবামার চিঠির বরাত দিয়ে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার জন বোয়েনার বলেন, প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, জর্ডানে ৭০০ সেনা পাঠানো হয়েছে। যত দিন প্রয়োজন, তত দিন তারা সেখানে অবস্থান করবে। এই সেনা ইউনিট প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান, নির্দেশ, নিয়ন্ত্রণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সেখানে অবস্থান করবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, গত কয়েক মাসে জর্ডানে অন্তত ২৫০ মার্কিন সেনা এসেছেন। নতুন করে সেনা পাঠানোয় সেখানে মার্কিন সেনার সংখ্যা প্রায় হাজারে উঠল।
সিরিয়ার ক্ষেত্রে ওবামা প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরেই ‘ধীরে চলো নীতি’ দেখানোর পর গত সপ্তাহে বিদ্রোহীদের হালকা অস্ত্র সরবরাহের অঙ্গীকার করে। ওয়াশিংটন বলছে, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে পেন্টাগন জর্ডানে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ও এফ-১৬ জঙ্গিবিমান সরবরাহের কথা জানালে সিরিয়ার মিত্র রাশিয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলে, সিরিয়ায় ‘বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা বলবত্ করার চেষ্টা করা হলে তা হবে অবৈধ। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, জর্ডানে সেনা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এক প্রকার শক্তিই প্রদর্শন করল। জর্ডানে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের মূল উদ্দেশ্য হলো সিরিয়া প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে পরিস্থিতিকে আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা। রাজনৈতিক সমাধান চান জন কেরি: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন বাড়াতে ফ্রেন্ডস অব সিরিয়া গ্রুপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রাজি হয়েছেন। কাতারের দোহায় গতকাল শনিবার শুরু হওয়া এই গ্রুপের বৈঠকে কেরি বলেন, সামরিক উপায়ে নয়, রাজনৈতিকভাবে সিরিয়া সমস্যার সমাধান করতে হবে। জন কেরি বলেন, রাজনৈতিক সমাধানের কাঠামো সেখানে আছে এবং জাতিসংঘ ও আরব লিগের সদস্যরা তা অনুমোদন করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রও তা অনুমোদন করেছে। সবচেয়ে ভালো সমাধান রাজনৈতিক সমাধান। বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ছাড়াও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগসহ অন্তত ১১ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যোগ দেন। এতে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রতি সহায়তা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.