ক্যাম্পাসের প্রিয় মুখ রাজীবের রাজত্ব by সজীব মিয়া

বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে যেন তাঁর আজন্ম সখ্য। তিনি আবার চর্চার জন্য গৎবাঁধা সময়ে বিশ্বাসী নন। তাই যখন-তখন বসে যান নানা রকম বাদযন্ত্র নিয়ে, সুর তুলতে। গান করার চেয়ে বেশি ভালোবাসেন প্রচলিত ও অপ্রচলিত যন্ত্র নিয়ে সুর সৃষ্টিতে।
কোন বাদ্যটা তাঁর বশ মানেনি! সেটা একতারা কি দোতারা, স্বরাজ হোক আর বেহালা হোক, সারিন্দা থেকে মাউথ অর্গান, আনন্দলহরি, বাঁশি কিংবা হারমোনিয়াম—সব তাঁর হাতের তলায়! এই বাদ্য বশীকরণ তরুণের নাম রাজীব কুমার বণিক। বন্ধু মহলে তো বটেই, ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি রাজীব নামে পরিচিত।
পড়াশোনা করেছেন নেত্রকোনার তেলেগাতি বিএনএসকে একাডেমি ও তারাকান্দা বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজে। এখন পড়ছেন সরকারি আনন্দমোহন কলেজে, ইতিহাস বিভাগে স্নাতক চতুর্থ বর্ষে।
ছোটবেলায় বাবা গৌরাঙ্গ বণিকের উৎসাহে গান শেখার শুরু। আর মা মায়া রানী বণিক সেই উৎসাহের সলতেটায় জ্বালানি দিয়েছেন নিয়মিত। কিন্তু পরিবারের আর্থিক টানাপোড়েন বাদ সাধে সংগীতের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায়। কিন্তু চেষ্টা যাঁর নিরন্তর, তাঁকে কি দমানো যায়? রাজীব নিরলস চেষ্টায় রপ্ত করে ফেলেছেন বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার। সংগীতের নানা মাধ্যমে তাঁর বিচরণ। শুনতে পছন্দ করেন ধ্রুপদি সংগীত, রবীন্দ্রসংগীতে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন আনমনে। নজরুলসংগীত নাকি তাঁর গলায় প্রাণ পায়। তবে গানের মঞ্চে লোকগীতি ও গণসংগীত নাকি বেশি গাওয়া হয়। আছেন নাটকের মঞ্চেও। তবে, নাটকে অভিনয়ের চেয়ে নাকি নির্দেশনা দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যুক্ত আছেন উদীচীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে।
এরই মধ্যে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন কর্মশালায়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে উচ্চাঙ্গসংগীতের ওপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ, উদীচীর আয়োজনে জাতীয় পর্যায়ে গণসংগীত নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন। মেধার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালের জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত প্রতিযোগিতায় হয়েছেন ময়মনসিংহ অঞ্চলে প্রথম। এ ছাড়া ময়মনসিংহ জেলা সংগীত প্রতিযোগিতা ও কলেজের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পেয়েছেন বেশকিছু পুরস্কার ও সনদ।
রাজীব বলেন, ‘আমার চিন্তাচেতনায় শুধুই সংগীত, এখন আমার একটাই স্বপ্ন, সংগীতশাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করা।’

No comments

Powered by Blogger.