দিনাজপুরে খুশির বন্যা

দিনাজপুর থেকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে নিকারের বৈঠকে বৃহত্তর দিনাজপুরের ৩ জেলা এবং বৃহত্তর রংপুরের ৫ জেলা নিয়ে 'রংপুরকে দেশের সপ্তম বিভাগ' হিসেবে অনুমোদন দেয়ায় আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী দিনাজপুর জেলার মানুষ।
প্রায় ১ কোটি ৩৮ লাখ মানুষের একটি স্বতন্ত্র ঠিকানা হিসেবে 'রংপুর বিভাগ' গঠন করায় দিনাজপুরের বিভিন্ন সত্মরের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছে। পাশাপাশি অবিলম্বে এই বিভাগের কার্যক্রম চালু করে পশ্চাৎপদ এ অঞ্চলের উন্নয়ন এবং মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে পদপে গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে 'রংপুর বিভাগ' হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার খবর প্রচারিত হওয়ার পর এই সিদ্ধানত্মের প্রতি স্বাগত জানিয়েছে দিনাজপুরের বিভিন্ন সত্মরের মানুষ। দিনাজপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আলহাজ নুরম্নল মঈন মিনু তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, রংপুর বিভাগ হওয়ায় তিনি খুশি ও আনন্দিত। পাশাপাশি তিনি বলেন, শুধু বিভাগ করলেই চলবে না, এই অঞ্চলের জনগণের উন্নয়ন, পূর্বাঞ্চলের লোকের সঙ্গে মাথাপিছু আয়ের সমতা এবং জাতীয় বাজেটে সম্পদ খরচের সমবণ্টনের অধিকার নিশ্চিত করে এই এলাকার গণমানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে। তাহলেই এই বিভাগ ঘোষণার সার্থকতা মিলবে। পরবর্তীতে তিনি ঐতিহ্যবাহী জেলা হিসেবে দিনাজপুরকেও বিভাগ ঘোষণার দাবি জানান।
দিনাজপুরের বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ এম এ কুদ্দুস তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, 'রংপুর বিভাগ হচ্ছে'_ এটা অবশ্যই আমাদের জন্য একটি সুখবর। তিনি আশা প্রকাশ করেন, রংপুর বিভাগ হলে এই অঞ্চলের উন্নয়ন হবে এবং ব্যবসাবাণিজ্যের েেত্র আমরা আরও এগিয়ে যাব। সরকারের এই সিদ্ধানত্মকে তিনি সাধুবাদ জানান।
বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব দিনাজপুর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক মীর্জা আনোয়ারম্নল ইসলাম তানু তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রংপুর বিভাগ হওয়াতে আমাদের অনেক সুবিধা হবে। রাজশাহী বিভাগ থাকাকালীন বিভিন্ন কাজে দূরত্বের েেত্র আমাদের যে হয়রানি হতে হতো_ ভৌগোলিক দিক থেকে রংপুর কাছে হওয়ায় আমাদের আর সেই হয়রানি হতে হবে না। বিভাগীয় যে কোন কাজ আমরা এখন খুব সহজেই দিনাজপুর থেকেই করতে পারব। রংপুর বিভাগ হওয়ায় তিনি বেশ খুশি এবং এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
উদীচী দিনাজপুরের সাধারন সম্পাদক শাহ রেজাউর রহমান রেজু তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, মূলত রাজশাহী দেশের বৃহত্তম বিভাগ হলেও এটি ছিল আমাদের অনেক দুরে এবং যোগাযোগের েেত্র ছিল অনত্মরায়। প্রশাসনিক কাজে বিভাগীয় কার্যালয়ে যেতে হলে আমাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হতো। কিন্তু রংপুর বিভাগ হলে বিভাগীয় প্রশাসনিক কাজে আমাদের আর দুর্ভোগে পড়তে হবে না। রংপুর বিভাগ হওয়াতে শুধু দিনাজপুরেরই নয়, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়সহ আশপাশের অন্যান্য জেলার মানুষের সুবিধা হবে।
দিনাজপুর ইলেক্ট্রিক মার্চেন্ট এ্রাসোসিয়েশনের সভাপতি এম জিয়াউল হক টিপু তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, রংপুর বিভাগ হওয়ায় তিনি বেশ খুশি ও আনন্দিত। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বিভাগকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলে ব্যবসাবাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং অথনৈতিক চাঞ্চল্য বৃদ্ধি পাবে।
দিনাজপুর প্রেসকাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রংপুর বিভাগ হচ্ছে_ এটা অবশ্যই আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনোত্তর প্রতিশ্রম্নতিতে রংপুরকে বিভাগ করার কথা জানিয়েছিলেন। নিকারের বৈঠকে রংপুর বিভাগ করার প্রসত্মাব অনুমোদন করায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতিশ্রম্নতি পূরণ করলেন। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার আজিমপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক ভূপেন্দ্রনাথ রায় জানান, বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে রাজশাহী যেতে আমাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হতো। কিন্তু দিনাজপুরে শিা বোর্ড হওয়ায় আমাদের সেই দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। এবার রংপুর বিভাগ হওয়ায় আমাদের আর কোন সমস্যাই থাকল না। বিভাগীয় যে কোন প্রশাসনিক কাজ আমরা এখন সহজেই করতে পারব।
দিনাজপুরের বিশিষ্ট প্রকৌশলী হোম পস্ন্যানের স্বত্বাধিকারী দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য বলেন, ইতোপুর্বে রাজশাহী বিভাগের অধীনে থেকে আমরা দিনাজপুরবাসী ভৌগোলিক অবস্থান এবং যোগাযোগের েেত্র অনেক পশ্চাৎপদে ছিলাম। এ জন্য অনেক প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হতো আমাদেরকে। কিন্তু রংপুর বিভাগ হওয়ায় আমাদের আর সেই সমস্যা থাকবে না। তিনি আশা প্রকাশ করেন এর ফলে আমারা বিভিন্ন েেত্র আরও এগিয়ে যাব।

No comments

Powered by Blogger.