ত্যাগেই শান্তি, ভোগে নয়, বিনোদ বিহারী

উপমহাদেশের ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের পুরোধা মাস্টারদা সূর্যসেনের সহযোদ্ধা, মানবতাবাদী, জীবন্ত কিংবদনত্মি বিনোদ বিহারী চৌধুরী বলেছেন, আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন মানুষের সেবা করে যাব।
আমি জানি, মানুষের সেবার চেয়ে বড় কিছু নেই। একই সঙ্গে ভোগের চেয়ে ত্যাগই শ্রেষ্ঠ। ত্যাগের মাধ্যমেই চিরশান্তি পাওয়া যায়; যা ভোগের মাধ্যমে পাওয়া যায় না। তিনি আরো বলেন, দেশের উন্নয়ন করতে হলে দেশকে ভালো বাসুন। নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে অপরে কিভাবে ভাল থাকতে পারে, এ জন্য কাজ করম্নন। একই সঙ্গে নিজের দেশকে সবার উপরে তুলে ধরম্নন। এর পাশাপাশি দেশের মানুষের জন্য কাজ করম্নন। জয় আমাদের নিশ্চিত। আমরা জয়ী হবই। দেশ উন্নত হবেই। তবে এর জন্য প্রেম চাই, ভালবাসা চাই। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান সবাই মিলেমিশে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে দেশের উন্নয়ন ঘটবে।
সোমবার যমুনা ব্যাংক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সম্মাননা ও আজীবন মাসিক ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে দেশপ্রেমের উলেস্নখ করে তিনি এসব কথা কলেন। এ সময় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যমুনা ব্যাংক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ নূর মোহাম্মদ। অন্যদের মধ্যে ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব মোঃ মতিয়র রহমান, সাংবাদিক আব্দুল মমিন, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান একিউ সিদ্দিকী বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিপস্নবী বিনোদ বিহারী চেীধুরীকে সম্মাননা ও আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়। আজীবন সম্মাননা হিসেবে প্রতিমাসে তাঁকে ২৫ হাজার টাকা প্রদান করা হবে বলে ব্যাংকের পৰ থেকে জানানো হয়েছে। এর আগে দৈনিক জনকণ্ঠ থেকে এ বীর পুরম্নষকে সম্পাননা দেয়া হয়েছে।
ড. আতিউর রহমান বলেন, মাস্টারদা সূর্যসেনের অগি্নমন্ত্রে দীৰিত বিনোদ বিহারী দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য ১৬ বছর বয়সে ব্রিটিশ সেনাদের বিরম্নদ্ধে সম্মুখ সমরে যোগ দেন চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহে। দৃঢতার সঙ্গে প্রতিবাদ করেছেন অন্যায়, অত্যাচার, শোষণ, বঞ্চনা ও নিপীড়নের । নিরনত্মর আত্মোৎসর্গ করেছেন অসহায়, নির্যাতিত, দুঃখী মানুষের সেবায়। পাশাপাশি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভু্যত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, মানব মুক্তির মিছিলসহ সর্বত্রই এ বীর বাঙালীর সগৌরব পদচারণা। জাতির সকল ক্রানত্মিকালে এই মহাপুরম্নষ রাজপথের সৈনিক ছিলেন শতাব্দীকাল ধরে।
গবর্নর আরও বলেন, নির্মোহ, প্রচারবিমুখ বিনোদ বিহারী চৌধুরী সারাজীবন সাদামাটা চলেছেন। ব্রিটিশ আমলে দীর্ঘ কারাবাসের সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইংরেজী ও আইনশাস্ত্রে উচ্চতর শিৰা গ্রহণ সত্ত্বেও কেবল গৃহে ছাত্র পড়িয়েই নিজের স্বকীয়তাকে ধারণ করে রেখেছেন। এই সংযত ও দরিদ্র জীবনে তাঁর আদর্শে কোন কালিমা লাগেনি।
ড. আতিউর রহমান বলেন, আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিনত্ম আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এখনও আসেনি। এ জন্য আমরা প্রতিনিয়তই যুদ্ধ করে যাচ্ছি। তবে অর্থনৈতিক মুক্তি আনার লৰ্যে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.