সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। বুধবার ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোতাহার হোসেন এ অভিযোগ গঠন করেন।

এদিন মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে গ্রেফতারকৃত চারজনকে জেল হাজত থেকে আদালতে আনা হয়। অভিযোগ গঠনের সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এ মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি প্রদানের আবেদন জানালে আদালত তা নাকচ করে দিয়ে অভিযোগ গঠন করেন।
অব্যাহতির আবেদনে বলা হয়, আসামিরা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। পুলিশ তাদের নির্যাতন করে এ স্বীকারোক্তি আদায় করেছে। পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করলে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসতো।

এ মামলার আসামিরা হলেন, সাইফুল ইসলাম ওরফে মামুন, আল আমীন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি, রফিকুল ইসলাম খোকন ও সেলিম চৌধুরী ওরফে সেলিম আহম্মেদ। এদের মধ্যে সেলিম পলাতক।

আসামিদের অভিযোগ পড়ে শোনানোর পর তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ রাত ১টার দিকে গুলশানের কূটনৈতিক এলাকার ১২০ নম্বর সডকের ১৯/বি নম্বর বাসার সামনে গুলিবিদ্ধ হন সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলী (৪৫)। ৬ মার্চ ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ ব্যাপারে গত ৭ মার্চ গুলশান থানার এসআই মোশারফ হোসেন একটি মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ পরিদর্শক ওবায়দুল হক গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে ৩১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা সবাই ছিনতাইকারী। মূলত নেশার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে এক বিদেশিকে রাস্তায় দেখে ডলারের আশায় তারা খালাফকে ঘিরে ধরেন। এ সময় ছিনতাইকারীদের সঙ্গে খালাফের ধস্তাধস্তি হয়। এরই একপর্যায়ে আসামি সাইফুল ইসলাম মামুন পয়েন্ট ২২ বোরের রিভলবার দিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করেন।

আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে মামুন, মো. আল আমীন, আকবর আলী লালু ওরফে রনি ও রফিকুল ইসলাম খোকনকে এ মামলায় গত ২৪ জুলাই গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। তারা অন্য একটি মামলায় আটক ছিল।

এ মামলার রিমান্ডে থাকাকালীন তারা হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

তারা জানান, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর খিলক্ষেত থানার সেবা ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেনের বাসায় আসামি সাইফুল ইসলাম মামুন, লালু, আল আমীন ও রফিকুল ইসলাম খোকন ডাকাতি করতে গিয়ে অন্যান্য মালের সঙ্গে রিভলবারটিও ডাকাতি করে নিয়ে আসেন।

আসামি সাইফুল ইসলাম মামুন ও আল আমীন আদালতে আরো স্বীকার করেন, গত ৫ মার্চ রাতে ছিনতাই করতে গিয়ে বাধা দেয়ায় তারা সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলীকে ওই অস্ত্রটি দিয়েই গুলি করে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি ভাষানটেক থানার মানিকদী বাজার সংলগ্ন রফিকুল ইসলাম খোকনের একটি গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

No comments

Powered by Blogger.