টুকরো টুকরো ছবি

উতসেয়ার ইচ্ছাপূরণ
দিবারাত্রির ম্যাচ, রাতের শিশিরে স্পিনারদের সমস্যার কথা ভেবে টসটাকে মহাগুরুত্বপূর্ণ বলেছিলেন প্রসপার উতসেয়া। দিবারাত্রির ম্যাচ শেষ পর্যন্ত শুধু দিনের হয়ে গেছে। তবে সবুজের ছোঁয়া থাকা উইকেট আর মেঘলা আকাশ মিলিয়ে টসটা গুরুত্বপূর্ণই ছিল। সেই টস জিতলেন উতসেয়া, প্রত্যাশামতো বাউন্সও পেয়েছেন পেসাররা। সিরিজে তাই প্রথমবারের মতো দেখা গেল দুই স্লিপ আর এক গালি!

অবাকপর্ব: ১
ইনিংসের প্রথম বলেই জোরালো এলবিডব্লুর আবেদন থেকে বেঁচে যান তামিম ইকবাল। টিভি রিপ্লে দেখাল, বল যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। ওভারের শেষ বলে পায়ে লাগার পর আবারও জোরালো আবেদন, এবার আঙুল তুলে দিলেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা। তামিমকে দেখে মনে হলো, জীবনে এতটা অবাক হননি! প্রচ্ছন্ন একটা হাসিও খেলে গেল ঠোঁটের কোণে।

অবাকপর্ব: ২
বলটা মারারই ছিল, জুনায়েদ সিদ্দিকের টাইমিংও হয়েছিল দারুণ। গুলির বেগে বেরিয়ে যাওয়া বলটিকেই স্কয়ার লেগে দুর্দান্ত এক ডাইভিং ক্যাচ বানালেন ছোটখাটো গড়নের উতসেয়া। হতভম্ব হয়ে ফিল্ডারের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন জুনায়েদ, এরপর হাঁটা দিলেন ড্রেসিংরুমের দিকে।

রানআপে গন্ডগোল
৬ ওয়ানডের ছোট্ট ক্যারিয়ারে এই প্রথম ওভারপ্রতি ৭ রানের কম দিলেন শিঙ্গিরাই মাসাকাদজা। তবে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার ছোট ভাই শুরুতে ঝামেলায় পড়েছিলেন বোলিং রানআপ নিয়ে। রানআপ না মেলায় প্রথম চার ওভারেই বল ডেলিভারির ঠিক আগ মুহূর্তে থেমে গেলেন পাঁচবার!

প্রাইসের পণ্ডশ্রম
উতসেয়ার বল সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে হলো না রকিবুলের। প্যাডে লেগে বল চলে গেল বাউন্ডারির দিকে। প্রাণপণ দৌড়েও চার ফেরাতে পারলেন না রে প্রাইস। বল কুড়িয়ে উল্টো ঘুরে দেখেন সতীর্থরা ব্যস্ত উদ্যাপনে, অনেক আগেই যে রকিবুলকে এলবিডব্লু দিয়ে দিয়েছেন আম্পায়ার!

ফুটবল কোচ!
টাচ লাইনে দাঁড়িয়ে শিষ্যদের নির্দেশনা দিতে দেখা যায় ফুটবল কোচদের, ক্রিকেট কোচদের সঙ্গে ব্যাপারটা ঠিক যায় না। তবে কাল ক্ষণিকের জন্য ফুটবল কোচ হয়ে গেলেন অ্যালান বুচার। সাকিব-মুশফিকুরের জুটিতে মাঠে যখন অসহায় জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররা, চিৎকার করে ও বাউন্ডারি লাইনের কাছের ফিল্ডারদের কাছে গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছিলেন বুচার।

নড়াইল এক্সপ্রেসের ফেরা
আবেদন করতে করতে বসে পড়েছিলেন মাশরাফি, কিন্তু সাড়া দিলেন না আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা। পরের ওভারে আবারও জোরালো আবেদন, এবারও হতাশ মাশরাফি। পরে টাটেন্ডা টাইবুকে বোল্ড করে মাশরাফি পেয়েছেন কাঙ্ক্ষিত উইকেটের দেখা। চোট কাটিয়ে ফিরেছেন সিরিজের প্রথম ম্যাচেই, কিন্তু মাশরাফি স্বরূপে ফিরলেন কাল। উইকেট পেয়েছেন একটি, কিন্তু পাওয়ার কাছাকাছি গেছেন অনেকবার। প্রথম স্পেলে টানা ৮ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন ফিটনেসের প্রমাণও। গত জুলাইয়ে এজবাস্টনে সর্বশেষ প্রথম স্পেলে ৮ ওভার বোলিং করেছিলেন। কালকের মতো সেদিনও ১৭ রান দিয়ে ১ উইকেট, শুধু সেদিন মেডেন ছিল দুটি, কাল একটি।

অন্য শফিউল
প্রতিশ্রুতিশীল বোলার, সাদাসিধে ছেলে—শফিউলকে এভাবেই চেনে বাংলাদেশ ক্রিকেট। কাল দেখা গেল অন্য শফিউলকে। রে প্রাইসকে আউট করে তেড়েফুঁড়ে গেলেন যে শফিউল, তাঁর শরীরী ভাষা সত্যিকারের ফাস্ট বোলারের মতো। শুধু শফিউল নন, পুরো বাংলাদেশ দলের উদ্যাপনটাই যেন একটু অন্যরকম হলো। পরে ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করলেন আবদুর রাজ্জাক, ‘বোলিংয়ের সময় প্রাইসের শরীরী ভাষা সব সময়ই আক্রমণাত্মক থাকে। সুযোগ পেয়ে আমরাও একটু ফিরিয়ে দিলাম!’
 আরিফুল ইসলাম

No comments

Powered by Blogger.