মিল্ক ভিটা তরল দুধ

মিল্ক ভিটার ব্যবস্থাপনা কমিটি তাদের তরল দুধের খুচরা দাম লিটারপ্রতি দুই টাকা বাড়িয়ে ৫০ টাকা নির্ধারণের একটি সিদ্ধান্ত গত সপ্তাহে গ্রহণের পরপরই প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে বাতিল করা হয়েছে। ইচ্ছামতো দাম বাড়ানোর জন্য যখন ভোজ্যতেলের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বাণিজ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে দাম কিছুটা কমাতে বাধ্য করলেন, তখন সরকারের আওতাধীন একটি প্রতিষ্ঠান কীভাবে দুধের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে পারে? মন্ত্রণালয় ও সমবায় অধিদপ্তর বলছে, তারা এ ব্যাপারে কিছু জানত না। মিল্ক ভিটা কর্তৃপক্ষ একতরফাভাবে দাম বাড়াতে পারে না।
এই মুহূর্তে দুধের দাম বাড়ানোর কোনো কারণ নেই, তাই দাম বাড়ানোর উদ্যোগটি বাতিল করা হয়েছে। এর আগেও আমরা দেখেছি, মিল্ক ভিটা হঠাৎ করে দাম বাড়ায়, কাউকে কিছু জানানোর প্রয়োজনও বোধ করে না। এক সকালে দোকানে কিনতে গিয়ে ক্রেতা জানতে পারে যে দুধের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর আগে ছিল লিটারপ্রতি ৪৬ টাকা। এখন ৪৮ টাকা। কয়েক বছর আগে ছিল ২৮ টাকা লিটার। এরপর হঠাৎ দফায় দফায় দাম বাড়ানো হতে থাকে।
এটা ঠিক যে বাজারে অনেক জিনিসের দাম বছর বছর বাড়ে। কিন্তু অন্তত সরকারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যের দাম যেন খেয়ালখুশিমতো বাড়ানো না হয়, সেটা নিশ্চিত করা দরকার। কারণ সরকারই যদি দাম বাড়ায়, বেসরকারি মালিকেরা কেন বাড়াবেন না?
মিল্ক ভিটা নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আগে হিসাব নেওয়া হোক প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ে সামঞ্জস্য আছে কি না, প্রতিষ্ঠানটির দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ হয়েছে কি না। মিল্কভিটা সদ্য সমাপ্ত ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রায় ১৬ কোটি টাকা মুনাফা অর্জনের রেকর্ড করেছে। কাজেই এই মুহূর্তে মিল্ক ভিটাকে লাভজনক করার জন্য দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করা হলে মিল্ক ভিটার লাভের অভাব হওয়ার কথা নয়। আমরা আশা করব, ভবিষ্যতে দাম কমানোর বিষয়টি সরকার সক্রিয় বিবেচনায় নেবে।

No comments

Powered by Blogger.