কিরগিজস্তানে সহিংসতা ফের বেড়েছে

কিরগিজস্তানে নতুন করে সহিংস ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাতে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের ওশ শহরে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। জাতিগত উজবেকরা শহরটির একটি তেলের গুদাম দখলে নিয়ে বিস্ফোরণের মাধ্যমে তা উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
কয়েক দিনের সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ১৭৮ জনে পৌঁছেছে। এদিকে উজবেকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার শরণার্থীর জন্য জাতিসংঘের প্রথম ত্রাণবাহী বিমান গতকাল বুধবার দেশটির আন্দিজান শহরে পৌঁছেছে।
ওশ শহরে বার্তা সংস্থা এএফপির একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক সহিংসতা বাড়ার খবর দিয়ে জানান, রাতে শহরে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। অসংখ্য বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তবে শহরের ঠিক কোন স্থান থেকে গুলি করা হচ্ছে বা তা কোথায় আঘাত করছে তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। একপর্যায়ে টানা ৪৫ মিনিট এই গোলাগুলি চলে। ওশ শহরের বাসিন্দারা জানান, সারা রাত ধরে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। জাতিগত উজবেকরা ওশ শহরের একটি তেলের গুদাম দখল করে নিয়েছে। বিস্ফোরণের মাধ্যমে তা উড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছে তারা। ওশ শহরে গতকাল কিরগিজ সেনাদের টহল দিতে দেখা গেছে।
কিরগিজস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, সহিংসতায় গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৭৮ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ওশ শহরে ১৩২ ও জালালাবাদে ৪৬ জন। সহিংসতায় এক হাজার ৮০০ জন আহত হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা রেডক্রস জানায়, হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি। এই মুহূর্তে সঠিক সংখ্যা বলা সম্ভব নয়। অনেককে সমাহিত করা হয়েছে, যেগুলোর হয়তো হিসাব করা হয়নি। আবার অনেক লাশ এখনো রাস্তায় পড়ে আছে।
উজবেকিস্তানের স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ত্রাণ নিয়ে গতকাল বুধবার একটি বিমান আন্দিজানে পৌঁছেছে। ত্রাণবাহী আরও কয়েকটি বিমান শিগগিরই পৌঁছার কথা রয়েছে। এদিকে শরণার্থীরা অভিযোগ করেছেন, সহিংসতার সময় কিরগিজরা উজবেক নারীদের ধর্ষণ ও শিশুদের নির্যাতন করেছে।
মধ্য এশিয়ার দেশ কিরগিজস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে কিরগিজ ও জাতিগত উজবেকদের মধ্যে গত ১০ জুন সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সহিংসতার জন্য ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট কুরমানবেক বাকিয়েভকে দায়ী করে আসছে। তবে বেলারুশে অবস্থানরত বাকিয়েভ এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

No comments

Powered by Blogger.