দুই গোলদাতা ও রোনালদো

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বিশ্বসেরাদের একজন। নিজ দেশের সেরাদের মধ্যে গোনা হয় রবার্ট ভিতেককে। মাইকনকে ঠিক দুটোর কোনো দলেই ফেলা যায় না। তবে বিশ্বকাপের পঞ্চম দিন তিনজনকেই এনে দিল এককাতারে। তাঁরা তিনজন পরশুর তিন ম্যাচের ‘তারা’, হয়েছেন ম্যাচ-সেরা।
গোলের পর কত রকম উদ্যাপনই তো দেখেছেন। উদ্যাপনের নানা ভঙ্গি নিয়ে আলোচনাও হয় বিস্তর। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এবারের বিশ্বকাপের সেরা গোলটি উপহার দেওয়ার পর মাইকন যা করলেন, তেমন কিছু ফুটবল ইতিহাস খুব কমই দেখেছে। রক্ষণ সামলানোর পাশাপাশি মাইকন নিজেও তো গোল করে বসেন প্রায়ই, তিনিই বা কবে গোল করে কেঁদেছেন! পরশু ব্রাজিলকে স্বস্তি দেওয়া গোলটির পর সতীর্থদের আলিঙ্গনে যখন সিক্ত হচ্ছিলেন, মাইকনের মুখে তখন হাসি কোথায়? মুখভঙ্গি ছিল কান্নার, গাল বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়েনি, তবে চোখের কোণে চিকচিক করছিল অশ্রু।
মাইকন নিজে অবশ্য কাঁদার কথা ঠিক মানতে চাইছেন না, ‘বিশ্বকাপে আমার প্রথম ম্যাচেই গোল করে ফেলেছি। আমি খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। মনে পড়ছিল এখানে আসতে আমাকে কত কিছু করতে হয়েছে। আমি ঠিক কাঁদিনি, তবে আমার স্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য বাগদানের আংটিতে চুমু খেয়েছি। আমাকে এই পর্যায়ে আনার জন্য ও অনেক সাহায্য করেছে।’
রবার্ট ভিতেককেও ম্যাচের সেরা বানিয়েছে একটি ‘প্রথম’। মাইকনের মতো তিনিও পেয়েছেন প্রথম গোল, তবে শুধু নিজের নয়, বিশ্বকাপে প্রথম গোল তাঁর দেশেরই। এর আগেও ৮টি বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব ছিল স্লোভাকিয়ার, তবে তা চেকোস্লোভাকিয়ার অংশ হিসেবে। ১৯৯৩ সালে চেকোস্লোভাকিয়া ভাগ হওয়ার পর স্লোভাকিয়া এবারই প্রথম বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছে। পরশু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫০ মিনিটে স্তানিশ্লাভ সেসটেকের পাসে মাথা ছুঁইয়ে বল জালে পাঠানোর পাশাপাশি ইতিহাসেও ঢুকে গেলেন ভিতেক।
পরশু আর দুই ম্যাচ-সেরার মতো গোল পাননি রোনালদো। আইভরিকোস্ট-পর্তুগাল ম্যাচে তো গোলই হয়নি। পুরো ম্যাচে বলার মতো গোলের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে হাতে গোনা কয়েকটি। সবচেয়ে কাছাকাছি গিয়েছিলেন রোনালদোই, একটি ফ্রি-কিক গোলবার কাঁপিয়ে ফিরে আসে মাঠে। তাঁর পায়ে বল গেলেই ম্যাচে যা একটু উত্তেজনা ছড়িয়েছে। হলুদ কার্ড পাওয়ার পরও তাই ম্যাচের সেরা রোনালদো।

No comments

Powered by Blogger.