শারমিনের ১.৬ পয়েন্টের আক্ষেপ

শ্যুটিং রেঞ্জে তিনি অসম্ভব মানসিক দৃঢ়তাসম্পন্ন এক মেয়ে। ঢাকায় এবারের দক্ষিণ এশীয় গেমসে ধৈর্যের পরীক্ষায় সবাইকে টেক্কা দিয়েছিলেন। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের দলগত ও ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনা জিতে দেশকে ভাসিয়েছিলেন আনন্দে। এসএ গেমসে পাওয়া সেই আত্মবিশ্বাস শারমিন আক্তার (রত্না) টেনে নিয়ে গেছেন দিল্লিতেও। আগের দিন দলগত ইভেন্টে সোনা জিতে ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনা জয়ের আশা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন আরও। কিন্তু কাল আর পারলেন না, ৪৯৪.৫ স্কোর করে রুপা জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো তাঁকে। তাঁর চেয়ে ১.৬ পয়েন্ট (৪৯৬.১) বেশি করে ভারতের নেহা সাপতে গলায় পরেছেন সোনার পদক। ৪৯২.২ স্কোর করে ব্রোঞ্জ জিতেছেন অস্ট্রেলিয়ার রবিন ভ্যান নাস।
দলগত ইভেন্টে শারমিনের সোনা জয়ের সঙ্গী সাদিয়া সুলতানা অবশ্য একটু হতাশই করেছেন। ৮ জনের চূড়ান্ত পর্বের অলিম্পিক রাউন্ডে সপ্তম হয়েছেন তিনি। তাঁর স্কোর ৪৯০.৪। বাংলাদেশের আরেক শ্যুটার তৃপ্তি দত্ত প্রাথমিক পর্ব থেকেই বাদ পড়েছেন। একাদশ স্থানে নাম লেখানো তৃপ্তি দত্তের স্কোর ৩৮৭।
নেহার সঙ্গে যে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে, সেই আভাসটা পাওয়া গিয়েছিল দলগত ইভেন্টে। দলগত ইভেন্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর করে সেই আভাস দিয়ে রেখেছিলেন ভারতীয় তরুণী। কাল তিনিই জিতে নিলেন সোনা। তবে স্নায়ুচাপে না ভুগলে হয়তো সাপতে পারতেন না শারমিনের সঙ্গে। শারমিন দিল্লি থেকে টেলিফোনে জানালেন, ‘আমি আসলে একটু বেশি স্নায়ুচাপে ভুগছিলাম। এ জন্যই হয়তো রেজাল্টটা খারাপ হলো।’ এসএ গেমসের স্কোরটা ধরে রাখতে পারলেই হতো। এসএ গেমসে করেছিলেন ৪৯৯.৪ স্কোর। এখানে করলেন ৪৯৪.৫। প্রাথমিক পর্বে ১০ শটের চারটি সিরিজে তিনি স্কোর করেন ৯৯, ৯৯, ৯৮ ও ৯৮। সব মিলিয়ে এল ৩৯৪। এরপর ফাইনালে, মানে শ্যুট অফে স্কোর করেন ১০.২, ১০.৪, ১০.১, ১০.৫, ১০.৫, ৯.৭, ৯.৩, ৯.৩, ৯.৪, ১০.২। সব মিলিয়ে ১০০.৫। অল্পের জন্য সোনার পদক হাতছাড়া করে একটু আফসোস হচ্ছে শারমিনের। তবে রুপা জিতেও অখুশি নন। কেননা, তিনি বুঝতে পারলেন শ্যুটিংয়ের বিশ্ব পর্যায়ে যাওয়ার সামর্থ্য তাঁর আছে। পরবর্তী লক্ষ্য হিসেবে বিশ্বকাপ শ্যুটিংকেই তাই পাখির চোখ করেছেন মাগুরার মেয়েটি। এ জন্য দেশে ফিরেই মগ্ন হতে চান নিবিড় অনুশীলনে।
কমনওয়েলথ শ্যুটিংয়ের অষ্টম দিন পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রাপ্তি দলীয় ও ব্যক্তিগত মিলিয়ে ১টি সোনা, ১টি রুপা ও ১টি ব্রোঞ্জ। আজ মেয়েদের প্রোনে লড়বেন সাবরিনা সুলতানা ও তৃপ্তি দত্ত।

No comments

Powered by Blogger.