আলোচনা নিয়ে সরকার-মাওবাদী ঠেলাঠেলি

কয়েক দিন আগেই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পালানিআপ্পন চিদাম্বরম বলেছিলেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হিংসা বন্ধের ঘোষণা দিলেই সরকার আলোচনায় বসার কথা ভাববে। জবাবে গত সোমবার রাতে মাওবাদী নেতা কিষেনজি জানান, ৭২ দিন পুলিশি অভিযান বন্ধ রাখলে তাঁরাও আলোচনায় রাজি। একই সঙ্গে তিনি বুদ্ধিজীবীদের মধ্যস্থতায় আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দেন।
এক অজ্ঞাত স্থান থেকে টেলিফোনে কিষেনজি সংবাদমাধ্যমকে জানান, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মের মধ্যে হিংসায় মদদ না দিলে এবং আদিবাসী অঞ্চলে উন্নয়নের ব্যাপারে মনোনিবেশ করলে মাওবাদীরা সহিংসতা বন্ধ রাখবে। কিষেনজি আরও বলেছেন, সরকার যতদিন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও হিংসা চালিয়ে যাবে, ততদিন মাওবাদীরা বিপ্লবী প্রতিহিংসা চালিয়ে যাবে। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত সরকার অবশ্য জানিয়েছে, আলোচনার ব্যাপারে কোনো আগাম শর্ত দিলে তা সরকার মানবে না। একই সঙ্গে সরকার মাওবাদীদের সহিংসতা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিবৃতি পাঠাতে আরজি জানানো হয়েছে।
গত সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে দেওয়া ওই বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ফ্যাক্স নম্বরও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলেছেন, ‘আমি কোনো “যদি”, “কিন্তু” বা “শর্ত” শুনতে চাই না। সরকার সংবাদমাধ্যমে মাওবাদীদের অনেক রকম বক্তব্য দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু কোনো সঠিক বক্তব্য ছাড়া সরকারের পক্ষে প্রতিক্রিয়া জানানো কঠিন। আর তাই সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে ফ্যাক্স করে বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে।’
আলোচনা নিয়ে যখন এই ঠেলাঠেলি চলছে, ঠিক তখনই পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গল মহলে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। গত সোমবার জঙ্গল মহলে মাওবাদীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর গুলির লড়াইয়ে কমপক্ষে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে পুলিশি সন্ত্রাসবিরোধী জনগণের কমিটির সভাপতিও রয়েছেন। এই হত্যার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের মাও প্রভাবিত তিন জেলায় কর্মসূচি দিয়েছে জনগণের কমিটি।
সম্প্রতি দুটি রাজ্যে পরপর দুটি ভয়াবহ হামলা চালিয়ে মাওবাদীরা ৩৫ জনকে হত্যা করে। এর মধ্যে একটি হামলা ছিল পুলিশ ফাঁড়িতে। এ অবস্থায় মাওবাদীদের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাব এল।

No comments

Powered by Blogger.