ট্রাম্প ও কিমের পরস্পরের প্রতি বিদ্রুপবাণের ইতিহাস

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সাথে মুখোমুখি আলোচনায় বসার প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প । হয়তো তারা এখন একটা বন্ধুত্বের সম্পর্কের দিকে এগুচ্ছেন, কিন্তু এই সেদিনও তারা পরস্পরের প্রতি চোখা চোখা বিদ্রুপের তীর ছুঁড়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘রকেট ম্যান’ নাম দিয়েছিলেন কিম জং উনকে। জাতিসংঘে এক ভাষণে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি উত্তর কোরিয়াকে ধ্বংস করে দেবেন। এর জবাবে কিম জং উন নিজে ট্রাম্পকে বলেছিলেন ডোটার্ড - যা একটি অপেক্ষাকৃত অপ্রচলিত ইংরেজি শব্দ, যার অর্থ ‘মানসিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল বৃদ্ধ ব্যক্তি’। গত বছর ১৯শে সেপ্টেম্বর কিম তার এক ভাষণে ট্রাম্পকে ডোটার্ড বলার পর সারা দুনিয়ায় অনেক লোককে ইংরেজি অভিধান খুঁজে তার অর্থ জানতে হয়েছিল। জবাবে ট্রাম্প টুইট করেন, কিম জং উন কেন আমাকে ‘বুড়ো’ বলে বিদ্রুপ করছে? আমি তো কখনো ওকে ‘বেঁটে আর মোটা’ বলবো না ! উত্তর কোরিয়ায় কিম পরিবারের অমর্যাদা করাটা মৃত্যুদন্ডযোগ্য অপরাধ। তাই ট্রাম্পের সরাসরি আক্রমণের জবাবে উত্তর কোরিয়ার সংবাদ মাধ্যম তার প্রতি নানা ধরণের গালাগালিসূচক শব্দ ব্যবহার করতে শুরু করে।
‘বিষাক্ত মাশরুম’, ‘কীট’, ‘গুন্ডাদলের সর্দার’, ‘বুড়ো হাবড়া’, ‘পাগলা কুকুর’, ‘উন্মাদ’ - ইত্যাদি নানা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে। উত্তর কোরিয়ার কেসিএনএ এজেন্সি সেখানকার দুটি ট্রেড ইউনিয়নকে উদ্ধৃত করে লেখে : ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প একটা ‘কীট’ এবং কৃষকরা যেসব পশু পালে তাদের চাইতেও অধম’, একটা ‘পাগলা বুড়ো।’ গত বছর ২৩শে সেপ্টেম্বর উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় দৈনিক রডং সিনমুন বলে, ট্রাম্প হচ্ছেন ‘একটা বিগড়ে যাওয়া মানুষ, একটা রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত, একটা গুন্ডা, একটা শিশু।’ ট্রাম্প যখন টুইট করেন যে তার পারমাণবিক বোতাম উত্তর কোরিয়ার চাইতে বড়, তখন রনডং সিনমুন তাকে একজন ‘সাইকোপ্যাথ’ এবং ‘বেপরোয়া পাগল’ বলে আখ্যায়িত করে লেখে, তার মন্তব্য হচ্ছে ‘পাগলা কুকুরের ঘেউ ঘেউ।’ তারা আরো লেখে, সারা বিশ্ব ট্রাম্পের ‘মানসিক অসুস্থতা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’ কেসিএনএ সেদেশের যুব লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিকে উদ্ধৃত করে বলে, ‘ট্রাম্প মানুষ নয়, গুন্ডাদের সর্দার, একটা পাগলা কুকুর।’ তবে আশা করা চলে, মে মাসে এই দুই নেতার যখন সাক্ষাৎ হবে তখন তারা এরকম ভাষা ব্যবহার করবেন না।

No comments

Powered by Blogger.