চমকের নাম ফখর

ভাগ্য সহায় ছিল ফখর জামানের। মাত্র তিন রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান, জাসপ্রিত বুমরাহর বল ‘নো’ হওয়ায়। এরপর আরও কয়েকবার ব্যাটের কোনায় লাগিয়ে  বল বাতাসে ভাসিয়েছিলেন। হাফ চান্সগুলো কাজে লাগাতে পারেননি ভারতীয় ফিল্ডাররা। বাকিটা সময় চোখজুড়ানো ইনিংস উপহার দিয়েছেন পাকিস্তানের এই বাঁ-হাতি ওপেনার। কিছুটা ভাগ্যের ছোঁয়ার সঙ্গে নিজের দক্ষতা কাজে লাগিয়েছেন ২৭ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারের মাত্র চতুর্থ ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরি (১১৪) করে কাল ওভালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানকে ৩৩৮ রানের বিশাল সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন ফখর। সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তান ১৮০ রানে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা নিজেদের করে নেয়। ফখর জামান হন ম্যাচসেরা। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই ফখরের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বার্মিংহামে। ফখরের রান চার ম্যাচে যথাক্রমে ৩১, ৫০, ৫৭ এবং ১১৪। আগের দুটি ম্যাচে তার ফিফটিতেই এগিয়ে যায় পাকিস্তান। ভারতের বিপক্ষে ফাইনালের চাপ উড়িয়ে দিয়ে সেঞ্চুরি করে পাকিস্তানকে রান চূড়ায় পৌঁছে দেন। ৯২ বলে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি পেয়েছেন।
হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ক্যাচ তুলে বিদায় নেয়ার আগে ১০৬ বলে করেছেন ১১৪ রান। ১২টি চার মেরেছেন, সঙ্গে দুই ভারতীয় স্পিনারকে মারা তিন ছক্কা। দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ফখর যখন ফিরছেন, পাকিস্তানের রান তখন ২০০। তিনি ফিরতে পারতেন দলীয় আট রানে। বুমরাহর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন। ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটাও শুরু করেছিলেন এ ওপেনার। কিন্তু আম্পায়ার ভিডিওর সাহায্য নেন। তাতে ধরা পড়ে ‘নো’ বল! এরপর ধুন্ধুমার ব্যাটিং করেছেন। উদ্বোধনী জুটিতে আজহার আলীর সঙ্গে গড়েছেন ১২৮ রানের জুটি। আজহার ৫৯ রানে রানআউটের শিকার হন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে এরআগে সেঞ্চুরি করেছেন মাত্র পাঁচ ব্যাটসম্যান। পাকিস্তানের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে সেঞ্চুরি পেলেন ফখর। এছাড়া আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে ওপেনিং জুটিতে এটাই পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান। বাঙ্গালোরে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ৮৪ রান তুলেছিলেন দুই ওপেনার আমির সোহেল ও সাঈদ আনোয়ার। এতদিন আইসিসির টুর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে এটাই পাকিস্তানের সর্বোচ্চ। ওভালে ভাঙল ২১ বছরের রেকর্ড।
সর্বোচ্চ রান (সেরা ছয়)
ব্যাটসম্যান    ম্যাচ    রান    সর্বোচ্চ    গড়    ১০০/৫০
শিখর ধাওয়ান (ভারত)    ৫    ৩৩৮    ১২৫    ৬৭.৬০    ১/২
রোহিত শর্মা (ভারত)    ৫    ৩০৪    ১২৩*    ৭৬    ১/২
তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ)    ৪    ২৯৩    ১২৮    ৭৩.২৫    ১/২
জো রুট (ইংল্যান্ড)    ৪    ২৫৮    ১৩৩*    ৮৬    ১/১
বিরাট কোহলি (ভারত)    ৫    ২৫৮    ৯৬*    ১২৯    ০/৩
ফখর জামান (পাকিস্তান)    ৪    ২৫২    ১১৪    ৬৩    ১/২
সর্বোচ্চ উইকেট (সেরা ছয়)
বোলার    ম্যাচ    উইকেট    সেরা বোলিং     গড়    ৪/৫ উইকেট
হাসান আলী (পাকিস্তান)    ৫    ১৩    ৩/১৯    ১৪.৬৯    ০/০
হ্যাজলউড (অস্ট্রেলিয়া)    ৩    ৯    ৬/৫২    ১৫.৭৭    ০/১
জুনায়েদ খান (পাকিস্তান)    ৪    ৮    ৩/৪০    ১৯.৩৭    ০/০
লিয়াম প্লাংকেট (ইংল্যান্ড)    ৪    ৮    ৪/৫৫    ২৪.৫০    ২/০
আদিল রশিদ (ইংল্যান্ড)    ৩    ৭    ৪/৪১    ২০.২৮    ১/০
ভুবনেশ্বর কুমার (ভারত)    ৫    ৭    ২/২৩    ২৮.১৪    ০/০

No comments

Powered by Blogger.