অস্ত্র হাতে সেই আইএস জঙ্গি ফেঞ্চুগঞ্জের নবীন

দুই বছর আগে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে পড়ে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার যুক্তরাজ্য প্রবাসী এক পরিবারের ১২ সদস্য। তারা সবাই সিরিয়ায় গিয়ে আইএসে যোগ দেয় বলে সে সময় জানিয়েছিলেন দেশে থাকা তাদের স্বজনরা। সম্প্রতি আইএসের পক্ষ থেকে অস্ত্র হাতে যে বাংলাদেশি যুবকের ছবি প্রকাশ করা হয় তা ওই পরিবারের সদস্য নবীনের বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (গণমাধ্যম) সুজ্ঞান চাকমা যুগান্তরকে বলেন, অস্ত্র হাতে যে যুবকের ছবি ছড়ানো হয়েছে তা নিখোঁজ পরিবারটির সদস্য নবীনের বলে জানা গেছে। স্বজনরা ছবি দেখে তাকে শনাক্ত করেছেন। স্বজনদের কাছ থেকে জঙ্গি পরিবারটির সম্পর্কে তথ্য নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জঙ্গি পরিবারটির গ্রামের বাড়ি ও তাদের স্বজনদের আগে থেকেই নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। সুজ্ঞান চাকমা দাবি করেন, ছড়িয়ে পড়া ছবিটি সাম্প্রতিককালের নয়। কমপক্ষে এক বছর আগের। এদিকে আইএসে যোগ দেয়া পরিবারটির প্রধান আবদুল মান্নানের ছোট ভাই আবদুল লতিফ ফেঞ্চুগঞ্জে গ্রামের বাড়িতেই থাকেন। সম্প্রতি প্রকাশ হওয়া অস্ত্র হাতে ছবিটি নিখোঁজ ভাতিজা নবীনের বলে তিনি আইনশৃংখলা বাহিনীকে জানিয়েছেন। তার পুরো নাম জাহিদ হোসেন নবীন। আবদুল লতিফ বলেন, যুক্তরাজ্যে থাকা আমাদের আত্মীয়ের কাছে একজন ইমেইলের মাধ্যমে ছবিটি পাঠিয়েছেন। তবে কে, কোথা থেকে ছবিটি পাঠিয়েছে তা তিনি জানেন না। তিনি সাংবাদিকদের জানান, আমার ভাই-ভাতিজা ২০১৫ সালের এপ্রিলে লন্ডন থেকে দেশে আসে। এক মাস পর দেশত্যাগ করে। তারা লন্ডনে গেছে কিনা তা জানার জন্য সেখানে থাকা আমার অন্য আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমাকে জানায়, তুরস্কে যাওয়া পর্যন্ত তাদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে।
এরপর আর ওই পরিবারের খবর মেলেনি। ব্রিটিশ পুলিশসহ স্বজনের মাধ্যমে খবর পেয়েছি, আইএস জঙ্গিদের সহায়তায় নবীনসহ পরিবারের ১২ জনই সিরিয়ায় চলে গেছে। নবীনের ছোট বোন রিজিয়ার প্ররোচনায় তারা সিরিয়ায় যায়। দেশে আসার কয়েক মাস আগে আরেকবার রাজিয়াসহ তার তিন বান্ধবী লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর হয়ে তুরস্কে যেতে চাইলে সেখানকার পুলিশ তাদের যেতে দেয়নি। সিরিয়ায় পাড়ি দেয়াদের মধ্যে নবীন ছাড়াও রয়েছে নবীনের বাবা আবদুল মান্নান, মা মিনারা বেগম, বড় ভাই সালেক হোসেন, মারিয়া বেগম, বোন রাজিয়া বেগম, তৌফিক হোসেন, আকিফ হোসেন, মান্নানের ছোট ভাই আবুল কাশেম, তার মেয়ে ফাতিমা বেগম, আবদুল মান্নানের ছেলে সালেকের স্ত্রী রওশন আরা বেগম ও তাদের এক মেয়ে। তারা যুক্তরাজ্যের বেডফোর্ডশায়ারের লুটন শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করত। নবীনের চাচাতো ভাই সাব্বির হোসেন বলেন, সোমবার আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা বাড়িতে এসেছিল। তারা অস্ত্র হাতে থাকা ছবিটির পরিচয় ছাড়াও আরও অনেক তথ্য জানতে চায়।

No comments

Powered by Blogger.