রাজাকারের ছেলে আওয়ামী পর্যটন লীগের আহ্বায়ক

বগুড়া শহরের কুখ্যাত রাজাকার ওসমান বিহারির ছেলে তারেক হাসান শেখ পাপ্পু জেলা আওয়ামী পর্যটন লীগের আহ্বায়ক হয়েছেন। কেন্দ্রীয় কমিটি তাকে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছে। এ ঘটনায় সচেতন নেতাকর্মীদের মাঝে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে পাপ্পু জানান, তার বাবা রাজাকার ছিলেন, এ ব্যাপারে মামলাও হয়েছে। তিনি দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী রাজাকারের বিরোধিতাকারী সন্তানদের পুনর্বাসন ও আশ্রয় দেয়ার ঘোষণা দেয়ায় তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন। অপর দিকে, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিন জানান, আওয়ামী পর্যটন লীগ নামে কোনো অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন নেই। সুযোগ সন্ধানীরা নানা নামে সংগঠন খুলছে। বিতর্কিত কেউ সংগঠনে ঢুকে পড়লে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ১৪ মে শেখ ওসমান গণি ওরফে ওসমান বিহারি, তার ছেলে ইকবাল হোসেন, আসলাম হোসেন ও পালক ছেলে আনোয়ার হোসেন শহরের থানা মোড় এলাকায় মোমিন রেডিও হাউসে হানা দেয়।
ওসমান বিহারির পিস্তলের গুলিতে দোকানের কিশোর কর্মচারী গুলজার হোসেন ঘটনাস্থলে মারা যায়। গুলিবিদ্ধ দোকান মালিক মোমিন পালিয়ে যান। ঘাতকরা গুলজারের লাশ গুম করে। দীর্ঘ ৩৭ বছর পর ২০০৮ সালের মে মাসের প্রথম দিকে শহরের উত্তর চেলোপাড়ার জনৈক মৃত আলীমুদ্দিন শেখের স্ত্রী নেকবানু বেওয়া তার ছেলে গুলজারকে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওসমান বিহারি ও তিন ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট আবু হেনা রেজাউল কামাল তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে এ মামলা যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক নেতাকর্মী জানান, রাজাকারের ছেলে পাপ্পু জেলা আওয়ামী পর্যটন লীগের আহ্বায়ক হওয়ায় সবাই অবাক হয়েছেন। তারা অবিলম্বে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন।

No comments

Powered by Blogger.