যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আয়কর বিবরণী জনসমক্ষে প্রকাশের দাবিতে ১৫ এপ্রিল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের দেড় শরও বেশি জায়গায় কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। খবর বিবিসির। যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্য ও রেওয়াজ মেনে এযাবৎকালের সব প্রেসিডেন্ট প্রার্থীই নির্বাচনী প্রচারণার সময় তাঁদের আয়কর বিবরণী প্রকাশ করলেও ট্রাম্প তা করেননি। জয়ী হয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পরও আয়করের তথ্য তিনি চেপে গেছেন। এখন ট্রাম্প কার কার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করেছেন এবং তিনি কোনো স্বার্থ-সংঘাতে জড়িয়ে আছেন কি না, তা ট্রাম্পের সমালোচকেরা জানতে চাইছেন। অনেকের সন্দেহ, রাশিয়ার সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়িক কিংবা অন্য কোনো ধরনের লেনদেন হয়ে থাকতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে শহরে ট্রাম্পসমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সেখান থেকে কমপক্ষে ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত দিক থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা আয়কর বিবরণী প্রকাশে বাধ্য না হলেও নৈতিক দিক বিবেচনা করে তাঁরা এটি প্রকাশ করে আসছেন। ট্রাম্প এটি প্রকাশ না করায় তিনি চাপের মুখে পড়েছেন। তাঁর ২০০৫ সালের আয়কর বিবরণীর কিছু অংশ গত মাসে সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়। মধ্য এপ্রিলে মার্কিন নাগরিকদের আয়কর তথ্য জমা দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া থাকে।
ঠিক এমন সময়ই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই ধরনের বিক্ষোভ শুরু হলো। ওয়াশিংটন ডিসিতে বিক্ষোভ করতে এসেছিলেন চাক ওয়াশ নামের একজন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, তাঁর (ডোনাল্ড ট্রাম্পের) বিনিয়োগ, তাঁর অনুদান এবং তাঁর যেকোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন এখন সমালোচনার মুখে।’ ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের সময় তাঁর উপদেষ্টা কেলিয়েন কনওয়ে যখন বলেছিলেন, ‘ট্রাম্পের আয়কর তথ্য নিয়ে জনগণের মাথাব্যথা নেই’, তখন অনেকের মতো আইনের অধ্যাপক জেনিফার তাউবও ক্ষুব্ধ হন। এই অধ্যাপকের মাথা থেকেই এই বিক্ষোভের ধারণা আসে। গত জানুয়ারিতে অধ্যাপক জেনিফার তাউব টুইট করেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া দরকার যে আয়কর তথ্য নিয়ে জনগণের মাথাব্যথা আছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পর জেনিফার বিবিসিকে বলেন, জানুয়ারিতে করা টুইট বার্তাটি এখন প্রাণ পেয়েছে এবং মানুষ বিক্ষোভে নেমেছে। অধ্যাপক জেনিফার তাউবও বলেন, যেখানে যুদ্ধব্যয় কমিয়ে জনসাধারণের সেবাসংক্রান্ত ব্যয় বাড়ানো দরকার, সেখানে ট্রাম্প তাঁর প্রেসিডেন্ট মেয়াদের শুরুর মাসগুলোতেই উল্টোটা করছেন। ওয়াশিংটন ডিসির ওই বিক্ষোভে ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্রেটিক কংগ্রেস উইম্যান ম্যাক্সিন ওয়াটারসও ছিলেন। তিনি বলেন, স্বচ্ছতা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এ পর্যন্ত কারা কারা হোয়াইট হাউসে এসেছেন, তার তথ্য প্রকাশ করা হবে না বলে গত শুক্রবার ট্রাম্প যে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি সেটিরও সমালোচনা করেন। এর আগে ওবামা প্রশাসন এই তথ্য প্রকাশ করলেও ট্রাম্প বলেছেন, এতে জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়বে।

No comments

Powered by Blogger.